পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৪৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8>ー বাঙ্গলার ইতিহাস । - * : || ভবিষ্যৎ-বংশাবলীর মুখ চাহিয়া এ অবস্থায় পুনরায় রাজ্যগ্রহণ র্তাহার পক্ষে দোষাবহ না হইতে পারে, কিন্তু স্বার্থের মায়ার রাজনীতির মূলস্বত্র বিস্তৃত হওয়া সৰ্ব্বথা ঘৃণিত তাহার সন্দেহ নাই। সম্ভবতঃ মীরজাফর এ সময়ে যৎকিঞ্চিৎ মানসিক বল প্রদর্শন করিলেই সন্ধির নিয়ম কথঞ্চিৎ পরিবর্তিত হইত। যাহা হউক, অতঃপর মীরজাফর খী সদলে অগ্রসর হইয়া অগ্রগামী ইংরেজসৈন্যদলের সহিত মিলিত হইতে চলিলেন। মীরজাফরের সহিত ইংরেজপক্ষের এই দ্বিতীয় সন্ধি স্থাপিত হইবার সময়ে দেশীয় প্রধান প্রধান লোক পুনরায় তাহার অনুকূল হইয়াছিলেন । নন্দকুমার প্রধান মন্ত্রী নিৰ্ব্বাচিত হইলেও দুল্লভ রাম বাদ পড়িলেন না। তিনিও উত্তরসাধক স্বরূপে মীরজাফরের সঙ্গে চলিলেন। জমিদারবর্গের অনেকেই স্বার্থ সাধনের নিমিত্তই হউক বা মীরকাসেমের অত্যাচার বশতই হউক এবারেও মীরজাফরের পৃষ্ঠপোষক হইলেন। জমিদারী ফৌজ ও মীরজাফরের অন্ত্রগত পূৰ্ব্ব সেনাদল শীঘ্রই তাহার দলপুষ্টি করিল। ইংরেজপক্ষে মুন্সী নবকৃষ্ণ এই সময়ে প্রধান পক্ষের পরামর্শে সহযোগী ছিলেন। তিনি মেজর আডামসের দেওয়ান হইয়া সন্ধি প্রভৃতি কার্য্যের ব্যবস্থা করিবার ক্ষমতা পাইয়া সৈন্তদলের সহিত যাত্রা করিলেন। - মীরকাসেমৃও নিশ্চিন্ত ছিলেন না। তাহার আয়োজন-বিবরণ নিয়ে কিঞ্চিৎ বিস্তৃতভাবেই প্রদত্ত হইতেছে। ইতিপূর্বেই উল্লিখিত হইয়াছে, বীরভূমির যুদ্ধ-ব্যাপারে বঙ্গীয়-সৈন্যের অকৰ্ম্মণ্যতা লক্ষ্য করিয়া মীরকাসেমৃ সৈন্যসংশো ধনের আবশুকতা অনুভব করেন। গুৰ্গিন্‌ খাঁর অধীনে এক দল মাত্র সৈন্য পূৰ্ব্বাবধি ইউরোপীয়-প্রণালী অনুসারে শিক্ষিত হইয়াছিল। মীরকাসেমের পাটনা যাত্রার পূর্বেই মহম্মদ তকী খাকে উপযুক্ত এক দল অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈন্য গঠনের আদেশ প্রদত্ত হইয়াছিল। পাটনা-অঞ্চলের জমিদারদলনের পরে মীরকাসেম ক্রমশঃ আকৰ্ম্মণ্য সেনাদলকে বিদায় দিতে আরম্ভ করেন। অনাবশুক জনতা এইরূপে অন্তহিত হইলে, তিনি মুঙ্গেরে বসিয়া স্বয়ং নূতন নিয়মে সৈন্যগঠন আরম্ভ করিলেন। অশ্বারোহী-সৈন্যদলে রোহিলা, আফগান প্রভৃতি পশ্চিমাঞ্চলবাসী মুসলমানই অধিক সংখ্যক নিয়োজিত হইল। সংখ্যা হ্রাস হইয়া সেনাদল ষোল হাজার হইলেও ইহার কার্য্যকারিতায় প্রাচীনদল অপেক্ষ অনেক পরিমাণে শ্রেষ্ঠ হইল। পদাতি-সৈন্যও এইরূপ দলে দলে ইউরোপীয় প্রণালীমত বিভক্ত হইল। শ্রেণীবিভাগ অনুসারে ইহাদের