পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৪৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

> মুঙ্গেরে হত্যাকাণ্ড । 8ー | : סוי ליג হণ করিল। বিপক্ষদলের ১৭টা কামান এবং ভাগীরথীবক্ষে দেড়শত নৌকাপূর্ণ শস্যসম্ভার ইংরেজের হস্তগত হইল। ইংরেজদলে হতাহত সংখ্যা সমধিক হইলেও ক্রমশঃ বৰ্দ্ধিত নীরজাফরের নুতন সৈন্যদলে তাহার স্থান পূর্ণ করিতে লাগিল । অতঃপর মিলিত সেনাদল উধুয়ানালার সুদৃঢ় দুর্গে স্থাপিত বিপক্ষের দিকে অগ্রগামী হইল। ইতিমধ্যে বৰ্দ্ধমান-অঞ্চল হইতে আরও সিপাহী খাদ্যাদি সহ উপস্থিত হইল । স্বতীর সংবাদ পাইয়। মীরকাসেমৃ মৰ্ম্মাহত ও সন্দেহু-দোলায় আন্দোলিত হইলেন। ( ১ ) তকী খার পরাভবের পর হইতেই তিনি পরিবারবর্গ ও ধনরত্ন রোটাসের সুদৃঢ় দুর্গে প্রেরণ করিবার কল্পনা করেন। এক্ষণে নবাবী পদ্ধতি অনুসারে প্রতিপালিত অসংখ্য দাসীবর্গকে বিদায় দিয়া পত্নী মীরজাফরদুহিতা ( ২ ) ও অন্তান্ত প্রিয়তম কয়েক জন বেগমকে মূল্যবান সম্পত্তি সমভিব্যাহারে বিশ্বস্ত মীর স্থলেমান ও রাজা নবৎ রায়ের কর্তৃত্বে রোটাসের দুর্গে পাঠাইলেন । স্বয়ং উধুয়ানালার সৈন্ত-পরিদর্শনে যাত্রার সঙ্কল্প করিলেন। কিন্তু তৎপূৰ্ব্বেই পরাভবে কঠোরতর নিৰ্ম্মম হৃদয়ের প্ররোচনায় মীরকাসেম হিন্দু বন্দিগণের প্রাণনাশের পৈশাচিক কল্পনা কার্য্যে পরিণত করিবার আদেশ দিলেন। অবিলম্বে রাজ রামনারায়ণ, পুত্ৰগণসহ রাজবল্লভ, ধনকুবের জগৎশেঠ ভ্রাতৃদ্বয়, সপুত্র বৃদ্ধ রায়রায়ান উমেদরাম ও রাজা ফতেসিংহ, বুনিয়াদ সিংহ প্রভৃতি বদ্ধিষ্ণু বিহার-জমিদারগণ নৃশংস নবাবের আদেশে নির্দয়ৰূপে নিহত হইলেন । (৩) (১) মুতাক্ষরীণ, ২য় খণ্ড । (২) ইনি মীরণের সহোদর, মীরজাফরের প্রথম পত্নীর গর্ভজাত। (৩) মুতাক্ষরীণ ২য় খণ্ড, ২৬৭-৬৮ ও ২৮১ পৃঃ। কেহ কেহ উধুরানাল ও মুঙ্গেরে অন্তের বিশ্বাসঘাতকতার পরে এই হত্যাকাণ্ড স্থাপন করিয়া ভ্ৰম করিয়াছেন। বলিদানের পরেই মীরকাসেম উধুয়ানালায় জয়দেবতার আবাহনে যাত্রা করেন। অভাগা রামনারায়ণের গলদেশে বালুকপূর্ণ গোণী বাধিয়া মুঙ্গেরের সম্মুখে ভাগীরথীগর্ভে নিমগ্ন করা হইয়াছিল। গোলাম হোসেনের মতে উধুয়ানালার পরাজয়ের পর পলায়নের সময়ে বার-নগরে শেঠস্বয়কে নিহত করা হয় ; কিন্তু সমসাময়িক জনশ্রুতি মুঙ্গের দুর্গের গণ্ডশৈলের উপরিভাগ হইতে তাহাদিগকে গঙ্গায় নিক্ষেপেৰ কথা নির্দেশ করে। সম্ভবতঃ উক্ত পলায়নকালেই মুতাক্ষরণকার শেঠবধের সংবাদ পান। এ সম্বন্ধে মুস্তাফার টীকাও দ্রষ্টব্য। ক্ষিতীশ-বংশাবলী অনুসারে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রও এই সময়ে মুঙ্গেরে বন্দীভূত ছিলেন, বিশ্বাস করিতে হয়। কৃষ্ণনগর রাজবাটীতে কৃষ্ণচন্দ্রের এই কালের এক প্রতিমূৰ্ত্তি আছে বলিয়া প্রবাদ। মুঙ্গেরে মীরকাসেমের করলে কবল হইতে আহিকের ছলে রক্ষাপ্রাপ্তি বড়ই সন্দেহের কথা। মুর্শিদাবাদে অবস্থান এবং সেই অবস্থায় পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভবপর।