পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৪৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬শ আ. উধুয়৷ নালা । 8ミー এখানে মিলিত হইয়াছিল। অন্য ব্যবস্থা এইরূপে নির্ণত হইলেও, মীরকাসেমের সন্দিগ্ধ চিত্তের কল্পনায় নেতার অভাব এবং বিভক্ত কর্তৃত্ব শক্রদলের সম্পূর্ণ সহায়তা করিল। দুর্গরক্ষক সৈন্যদল যাহাতে এক পরামর্শে কার্য্য করিবে এরূপ সুবিধা রহিল না। এ দিকে নীরজাফর খাঁ মেজর আডাম্স ও ইংরেজ-সেনা সঙ্গে ৪ঠা আগষ্ট গিরিয়া হইতে যাত্রা করিয়া ১১ই তারিখে উলূয়া-পরিখার দুই ক্রোশ অন্তরে পাঙ্কীপুর নামক স্থানে উপনীত হইলেন । শত্রুর সুদৃঢ় অবস্থান পৰ্য্যবেক্ষণ করিয়াই ইংরেজ সেনাপতি বুঝিতে পারিলেন, গঙ্গাতীর ভিন্ন অন্ত দিকে আক্রমণের কোনই আশা নাই ; পরস্তু শক্রপক্ষের কামানের মুখে এরূপ উদ্যম সম্পূর্ণ বিপদসঙ্কুল। নদীগর্ভে নৌকা হইতে কামান অবতরণ, সম্মুখে দুর্গপ্রাকার হইতে নিক্ষিপ্ত কামান-কন্দুকের গতিরোধ ও পরিখা-পূরণাদির জন্য উপকরণ নিৰ্ম্মাণ এবং তৎসাহায্যে ক্রমশ: অগ্রসর হইয়া স্বপক্ষের তোপমঞ্চ যথাসম্ভব পুরোভাগে স্থাপন ইত্যাদি প্রাথমিক অনুষ্ঠানেই তিন সপ্তাহ অতিবাহিত হইল। ইতিমধ্যে মীরকালেমের সুদক্ষ সেনানী মীর নজফের পরিচালিত সেনাদল নিশাযোগে বিলের সু প্রতর অংশ দিয়া পার হইয়া আসিয়া ইংরেজ সেনাদলের বামভাগে মীরজাফরের শিবির পর্য্যন্ত আক্রমণ করিয়া সময়ে সময়ে উহাদিগকে বিব্রত করিতে লাগিল। সকল দিকে আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করিয়া শনৈ: শনৈঃ অগ্রসর হইয়া আডাম্স চতুৰ্ব্বিংশ দিবসে ভাগীরথীতীরের দিক্ হইতে গোলাবর্ষণ আরম্ভ করিলেন। ইংরেজের এই ভীমকান্ত আগ্নেয়াস্ত্রের প্রচণ্ড পীড়নেও উধুয়া জুর্গের বিশাল মৃৎপ্রাচীরের কোনই ক্ষতিসাধন হইল না। কেবল নদীর দিকের দুর্গদ্বারের নিকটে একটি স্থান সামান্তমত ভগ্ন হইল ; ইংরেজ সেনাপতি হতাশ হইলেন । তিনি এক্ষণে দুর্গ প্রাচীর হইতে তিন শত গজ দূর পর্য্যন্ত অগ্রসর হইয়াছেন, আরও পুরোভাগে অগ্রসর হইলে দুর্গস্থ কামানের লক্ষ্যমাত্র হইতে হইবে,ইহা তাহার অজ্ঞাত ছিল না। নিরাশাতাড়িত ব্যাকুলহদয়ে বীরবর আডাম্স এই অসাধ্যসাধনব্যাপার পৰ্য্যবেক্ষণ করিতে লাগিলেন। দুরন্ত বর্ষাকালে সৈন্যদল এই অবস্থায় কত দিন রক্ষা পাইবে, এই চিন্তাই প্রবল হইল। দুর্গস্থ নবাবী সেনাদল শত্রুপক্ষের অবস্থা দেখিয়া নিরুদ্বেগে কালযাপন করিতে লাগিল । ইংরেজপক্ষের যুদ্ধকৌশল স্তিমিত হইলেও, অন্য উপায়ের দ্বার উন্মুক্ত ছিল। প্রবীণ চক্র মীরজাফর যে অভিপ্রায়ে খোজা পিন্দ্রকে সঙ্গে লইয়