পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৪৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টাদশ অধ্যায়। নবাবী আমলের বিধি ব্যবস্থা । আইন আদালত—বিচার প্রণালী । । অনেকের বিশ্বাস, মুসলমান অধিকারে বাঙ্গলার শাসন প্রবর্তনাদি বড়ই বিশৃঙ্খল ছিল। অত্যাচারী রাজকুলের যথেচ্ছ ব্যবহারে দেশে এক প্রকার নিরবচ্ছিন্ন অরাজকতাই বিরাজ করিত। বঙ্গবিজয়ের অব্যবহিত পরে প্রাথমিক পাঠান যুগের পক্ষে এ কথা আংশিক সত্য বটে, কিন্তু ইহা অনেক পরিমাণে ঐ প্রথম অবস্থাতেই দর্শন দিয়াছিল। সেকালের বিধি ব্যবস্থাও সভ্যতর যুগের তুলাদণ্ডে পরিমাপ হইতে পারে না। জগতের সর্বত্র জ্ঞানেন্মেষের সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক বিবর্তনের সহিত রাজকীয় ব্যবস্থার যে রূপ প্রবর্তন ও পরিবর্তন হইয়া আসিয়াছে, এস্থলেও সেইরূপ হইয়া আসিতেছিল। মুসলমান বিজেতা ধৰ্ম্মান্ধ হইয়াও সেকালের সভ্যতার পক্ষে যথেষ্ট সমুন্নত ছিলেন । সমকালবৰ্ত্তী অন্তান্ত সমাজের মত এখানেও রাজা সমাজশাসনযন্ত্রের যন্ত্রী হইয়াও ধৰ্ম্মশাস্ত্রোপদেষ্টগণের মতানুসরণে নিয়ম প্রচলনে বাধ্য ছিলেন ; সুতরাং প্রথম অবস্থায় এই বিজাতীয় শাসন দেশীয় প্রজাবর্গের শুভকর হয় নাই। কিন্তু এই প্রসঙ্গে স্মরণ রাখা উচিত, অন্তত যাহাই হউক, বাঙ্গলার মুসলমানরাজা দেশের আভ্যন্তরিক ব্যবস্থায় বিশেষরূপে হস্তাপণ করেন নাই ; বলপূর্বক রাজদণ্ড গ্রহণ করিয়া দোর্দণ্ড প্রতাপে রাজধানী হইতে শাসননীতি প্রবর্তন করিয়াছন মাত্র। গ্রাম্যসমিতি, প্রধান ও মণ্ডলের হস্তে আত্মশাসন পূৰ্ব্বপ্রথামত স্থাপিত করা হইয়াছিল। রাজস্ব আদায়কারী চৌধুরী বা ক্রোরীগণ প্রজার হস্ত হইতে রাজস্ব আদায় লইয়া জায়গীরদার বা স্বয়ং সুলতানের নিকট দাখিল করিতেন। গুরুতর বিষয়ে গ্রাম্যসমিতি যখন তাহাকে রক্ষা করিতে অসমর্থ বা কুষ্ঠিত, সেই স্থলেই প্রজা প্রতিকারের আশায় রাজ-যাহায্য প্রার্থনা করিত। কচিৎ কোনও জায়গীরদার বা নৃপতির হস্তে সাময়িক অত্যাচার হইলেও এরূপ ব্যবহার সাধারণ ছিল, বলা যায় না। মোগল অধিকারের পরে সময় ও সম্রাটের গুণে বিধি ব্যবস্থার যথেষ্ট সংশোধন হইয়াছিল ; পাঠান অধিকারের ক্রমাগত বিপ্লব মোগলের সবল হস্তে রাজদণ্ড গ্রহণের পর ক্রমশঃ শান্ত হইয়া আসিয়াছিল। জমিদারবর্গ নিজ অধিকার মধ্যে বিচার কার্য্যে সৰ্ব্বেসৰ্ব্ব৷ ছিলেন ; আত্মশাসন পূর্ববং প্রতিষ্ঠিত ছিল। একালে,রাজা দুর সামাজিক