পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8°○ বাঙ্গলার ইতিহাস । رد: জলুসের (বাদশাহের সিংহাসনারোহণের ) দিন এখানে প্রকাণ্ড দরবার হইত ; এই দরবারে সমস্ত প্রধান কৰ্ম্মচারী ও দেশস্থ গণ্যমান্ত লোক উপস্থিত থাকিতেন । এ দিন দারোগার নিকট পক্ষগণের বক্তব্য শুনিয়া কাজী মুফতী প্রভৃতির পরামর্শে নবাব স্বয়ং জটিল মোকৰ্দমার বিচার নিম্পত্তি করিতেন। নরহত্যার মোকৰ্দমা সাধারণতঃ নবাব স্বয়ং বিচার করিতেন। নবাব সপ্তাহে দুইদিন বিচারসনে উপবিষ্ট হইতেন। এই আদালতে মোকৰ্দমার ভার সাধারণতঃ দারোগার উপরেই অৰ্পিত ছিল। বাকী কর সম্বন্ধীয় মোকৰ্দমা খালসা দেওয়ানের এবং ফৌজদারী ও সৈন্তগণের সম্বন্ধে মোকৰ্দমা নিজামং দেওয়ানের নিকট বিচারের জন্য সোপর্দ হইত। গুরুতর মোকৰ্দমায় নাজিমের সম্মতি ভিন্ন বিচার শেষ হইত না । উভয় পক্ষের সম্মতিক্রমে অধিকাংশ মোকৰ্দমা সালিশগণের হস্তে সমৰ্পিত হইত। ধৰ্ম্মসম্বন্ধীয় গুরুতর মোকৰ্দমা বিদ্বানগণের সমবেত দরবারে ৰ কাজীর নিকট সোপর্দ হইয়া বিচারের ব্যবস্থা ছিল। অনেক সময়ে ফৌজদার, আমিল প্রভৃতি মফঃস্বলের কৰ্ম্মচারিগণের নিকটেও কোন কোন মোকৰ্দমা বিচারের জন্য প্রেরিত হইত। কোন জমিদার বা তালুকদারকে উৎখাত বা প্রতিষ্ঠিত করিতে হইলে নাজিম নিজামং আদালতে বা দরবারে খালসা দেওয়ানের পরামর্শ গ্রহণ করিয়া তৎসম্বন্ধে আদেশ দিতেন। ইতিপূৰ্ব্বে নরহত্যার মোকৰ্দমা প্রধান কাজীই নিৰ্ব্বাহ করিতেন ; অনেক সময়ে ( যেমন কাজী শরফ ও বৃন্দাবনের ঘটনা) কাজীর ধৰ্ম্মান্ধতায় অবিচার হওয়ার সন্দেহে কুলী খাঁ এই জাতীয় মোকৰ্দমা স্বীয় আম্ দরবারে নিষ্পত্তি করিবার ব্যবস্থা করেন। সদর কাজীর হস্তে এই অবধি মুসলমান ধৰ্ম্ম ও দায়াধিকার প্রভৃতির বিচারভারই ছিল । নরহত্যা, ডাকাইতি প্রভৃতি মুসলমান সরার মতে হইত ; অন্যান্ত বিষয়ে হিন্দুদের হিন্দুশাস্ত্রমতে এবং মুসলমানগণের মুসলমানশাস্ত্রমতে বিচার কার্য নিৰ্বাহ হইত। হিন্দুগণের এই জাতীয় মোকৰ্দমা দেওয়ান স্বীয় আদালতে শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতদের মীমাংসা মতে নিষ্পত্তি করিতেন। দেওয়ানী আদালতেও একজন প্রধান কৰ্ম্মচারী বা দারোগ৷ কাৰ্য্য নিৰ্বাহ করিতেন। দারোগ উভয় পক্ষের বাদ প্রতিবাদ লিপিবদ্ধ করিয়া খালস দেওয়ানের নিকট পেশ করিলে দেওয়ান বিচার করিতেন। অনেক সময়ে সেরেস্তাদার, কানুনগো প্রভৃতির পরামর্শমতে বিচারকার্য নিম্পন্ন হইত। জমিদারগণের সীমানা সরহদ লইয়া বিবাদ এবং প্রজার দেয় বাকীখাজনার বিষয়ে