পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উনবিংশ অধ্যায়। -- রাজ ও জমিদার—জমিদারী বন্দোবস্ত । আমাদের এই বাঙ্গলা দেশে রাজা ও প্রজার মধ্যবর্তী জমিদার নামে কথিত এক শ্রেণীর ভূম্যধিকারী রহিয়াছেন। কিন্তু ভারতের অন্য কোথাও ঠিক এ ভাবের ব্যবস্থা নাই দেখিয়া, জমিদার শ্রেণীর উৎপত্তি বিষয়ে নানা মতের উৎপত্তি হইয়াছে। প্রাচীন কালের অবস্থা আলোচনা করিতে হইলে দেখা যায় যে, হিন্দু রাজত্বের সময়ে রাজ-গ্ৰাহ ষষ্ঠাংশ কর দেশভেদে গ্রামপতি, প্রধান, দেশমুখ্য প্রভৃতি নামের রাজকৰ্ম্মচারিবর্গের দ্বারা আদায় করা হইত। পৌরাণিক যুগে সমগ্র ভারত অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খণ্ড রাজ্যে বিভক্ত হইয়া পড়িয়াছিল। এই প্রাদেশিক রাজ্যবর্গ যখন কোন পরাক্রান্ত নৃপতির নিকট পরাজিত হইয়া তাহার শাসনাধীন হইতেন, তৎকালে তাহারা কোথাও বা বিজেতা রাজার করদ হইয়া পড়িতেন, কুত্ৰাপি কেবল অধীনতা মাত্র স্বীকার করিয়াই অব্যাহতি পাইতেন । বিজেতা রাজচক্রবর্তী বা মগুলেশ্বর ভূপতি, বগুত স্বীকার করিলে ক্ষুদ্র রাজগণের প্রায়ই উচ্ছেদ করিতেন না। এইরূপে বঙ্গের প্রত্যন্ত ভাগে অনেক খণ্ডরাজ্য গঠিত হইয়াছিল। মুসলমান অধিকারের প্রথম যুগে বিজেতা পাঠানের বাঙ্গলার সীমান্তভাগের রাজগণকে সম্পূর্ণরূপে পরাজিত বা আয়ত্ত করিতে পারেন নাই ; দেশের অভ্যন্তরেও অনেক স্থলে রাজস্ব আদায়কারী চৌধুরী (চতুধুরীণ) দিগকে উৎখাত করেন নাই। বিজেতা পাঠানরাজ ও সামন্তবর্গ যখন দিল্লীশ্বরের অধীনতা হইতে শৃঙ্খল মুক্ত হইয়া স্বাধীনতা লাভের জন্ত যুদ্ধাদি কার্ঘ্যে ব্যাপৃত হইলেন, তখন হিন্দু রাজা ও প্রধান-বর্গের সহানুভূতি লাভ করিবার প্রয়াস পাওয়া তাহদের পক্ষে স্বাভাবিক হইল। এই কারণে অনেক সময়ে গৌড়ের বাদশ কোন সীমান্তভাগের হিন্দু রাজ্যকে পরাভূত করিলে ৪ তাহকে শাসনাধীন করিয়া তাহারই সাহায্যে রাজস্ব আদায় কর স্থযুক্তিসঙ্গত বোধ করিয়াছেন এবং প্রধান প্রধান আদায়কারী চৌধুরীদিগের ক্ষমতা লোপ করিবার উদ্যোগ করেন নাই। গৌড়ের মুসলমান নরপতিগণ