পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিংশ অধ্যায় । -***** === নবাবী আমলে দেশের সাধারণ অবস্থা । সাধারণতঃ লোকের মনে একটা সংস্কার আছে যে, মুসলমান অধিকার ও মুসলমান-শাসনে ভারতের কোন স্থায়ী উপকার সাধিত হয় নাই ; সপ্ত শতাব্দী কাল-ব্যাপী মুসলমান প্রভূত্ব ভারতবর্ষের অন্ধতমসাচ্ছন্ন কলিযুগ। এই বিষয়টি বিচার করিবার পূৰ্ব্বে মুসলমান-বিজয়ের প্রাক্কালে ভারতে হিন্দু সমাজের আভ্যন্তরিক অবস্থার কথা অনুধাবন করা কৰ্ত্তব্য। আমরা আপনাদিগকে যেরূপ ভাবি, তাহ অপেক্ষ অন্তে আমাদিগকে যে ভাবে দেখে, সেটি বড় অল্প মূল্যবান নহে। মহমুদ গজনবীর সমকালে বিদেশীর চক্ষে হিন্দু সমাজ কি ভাবে প্রতিভাত হইয়াছিল, সুপ্রসিদ্ধ আবি রেহান আল বিরুণীর গ্রন্থে তাহার ৰথেষ্ট আভাস পাওয়া যায়। ইনি খোরাসানবাসী এবং গজনীর সভাপণ্ডিত ; মহমুদের পুলের রাজ্যকালে উত্তর পশ্চিম ভারতের নানা স্থানে পরিভ্রমণ করিয়া দেশের তাৎকালিক অবস্থা লক্ষ্য করিয়াছেন। স্বয়ং স্থবিজ্ঞ দার্শনিক বলিয়া হিন্দু দর্শন ও শাস্ত্রগ্রন্থ অধ্যয়নে তাহার আত্যন্তিকী স্পৃহা জন্মে। সে কালে বিদেশীর পক্ষে এই সমস্ত বিষয়ে সম্যক্ জ্ঞানলাভ দুরূহ ব্যাপার ছিল বলিয়া, তাহার প্রকাগু গ্রন্থে ভ্রম লক্ষিত হইলেও, উহাতে যে সাধারণ বিবরণী প্রদত্ত হইয়াছে, তাহ অন্ধবিশ্বাসী বিজাতীরের উক্তির ন্তায় সৰ্ব্বথা একদেশদর্শী নহে। হিন্দু দর্শন, অঙ্কশাস্ত্র, চিকিৎসাদি সম্বন্ধে সবিশেষ শ্রদ্ধার সহিত উল্লেখ করিয়া পরিব্রাজক ভাবতীয় হিন্দু চরিত্রের দোষভাগ ও প্রদর্শন করিয়াছেন। জাতি-বিভাগ ও পৌত্তলিকতা প্রভৃতি অধ্যায়ে হিন্দুর কা গুজ্ঞানের অভাব ও অন্ধবিশ্বাসের যে নিন্দাবাদ করিয়াছেন, তাহ কিয়ৎপরিমাণে হিন্দু সমাজ সম্বন্ধে নবাগতের স্বাভাবিক অন্তদৃষ্টির অভাবের ফল হইলেও যে, অনেকাংশে সত্য, ইহা অস্বীকার করিবার উপায় নাই। তিনি সে কালের ব্রাহ্মণদিগের গ্রন্থে আড়ম্বর ও শব্দের কচ কচি লক্ষ্য করিয়াছেন । হিন্দু রাজন্তবর্গের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতির অথবা দেশ-হিতাৰ্থ এক প্রাণতার সম্পূর্ণ অভাব এবং লোভ ও অত্যাচার নির্দেশ করিয়াছেন । দেখাইয়াছেন, ভীরু হিন্দুগণ -