পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Q > c বাঙ্গলার ইতিহাস । २**, *: কিরূপে বিজেতা মুসলমানের সমক্ষে:"ধূলিকণার স্তায় বিক্ষিপ্ত হইয়াছে । ইবন বতোতা প্রভৃতি পরবন্ত পরিব্রাজকগণও ব্রাহ্মণগণের ধীশক্তি, তাহদের দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, লক্ষ্য করিয়া ও সাধুরণ প্রকৃতিপুঞ্জের অজ্ঞতা ও অবস্থ দৃষ্ট্রে দুঃখ প্রকাশ করিয়াছেন। বিজেতৃ-স্থলভ গৰ্ব্ব এবং এ দেশবাসী সম্বন্ধে অভিজ্ঞতার অভাব সত্ত্বে ও বিদেশীয়ের এইরূপ মন্তব্যের এমন একটা দিক্‌ আছে, যাহার মূল্য বড় অল্প নহে। পরবর্তী পৌরাণিক যুগে প্রাচীন হিন্দুকালের ধীশক্তি ও কাৰ্য্যকারিতার হাস হইয়া আসিয়াছিল। এক জন মাননীয় মহা পণ্ডিত বলেন, ভাস্করাচাৰ্য্যই ভারত-গণনের শেষ জ্যোতিষ্ক। পৃথ্বীরাজই শেষ ক্ষত্ৰিয় বীর, এইরূপ নির্দেশ করিলে বোধ হয় অধিক ভ্রম হইবে না । জাতিবিভাগের ও ধৰ্ম্মবুদ্ধির অপব্যবহারে তৎকালেই হিন্দুর মানসিক বল খৰ্ব্বত প্রাপ্ত হইতেছিল । খণ্ডরাজ্যে বিভক্ত ভারতের ক্ষাত্রতেজ ক্রমশ: নিম্প্রভ হইয়া আসিতেছিল। এক প্রাণতার অভাবে সমগ্র হিন্দুসমাজে সাৰ্ব্বজনীন নিজাবত দর্শন দিয়াছিল। অবশিষ্ট ছিল কেবল তাহার শান্তভাব ও ধৰ্ম্ম প্রবণতা। মুসলমান-বিজয়ের অব্যবহিত পরে দেশের অবস্থা অবশু অধিকতর শোচনীয় হইয়াছিল ; বিপ্লবে সৰ্ব্বকালে সৰ্ব্বত্র যাহা ঘটিয়া থাকে, তাহাই পূর্ণমাত্রায় দর্শন দিয়াছিল। মোগলসাম্রাজ্য-স্থাপিয়তা বীরবর বাবর স্বীয় স্মারক-লিপি-গ্রন্থে হিন্দুস্থানের তাৎকালিক অবস্থার-বিষয়ে যাহা নির্দেশ করিয়া গিয়াছেন, তাহ কিয়ৎপরিমাণে বিষয়জানের অভাবজনিত একদেশ-দর্শিতাদোষে দুষ্ট হইলেও লক্ষণীয়। তিনি লিখিয়াছেন, “হিন্দুস্থানে স্পৃহণীয় পদার্থ অতি অল্পই আছে। লোকজন স্বত্র নহে ; পরম্পর মিলিয়া মিশিয়া আমোদ প্রমোদ সম্বন্ধে জ্ঞান তাহদের কিছু মাত্র নাই – প্রতিভা, ধীশক্তি, শিষ্টাচার এবং পরস্পর সহানুভূতি কিছুই নাই ; তাহাদের কারুকার্য্য ও স্থাপত্যে তীক্ষ্ণ মনীষা বা অভিনব উপায় উদ্ভাবনের ক্ষমতার একান্ত অভাব। এদেশে ভাল ঘোড়া, ভাল মাংস, আঙ্গুর তরমুজ প্রভৃতি উৎকৃষ্ট ফল, রুট, বরফ কিছুই নাই। সাধারণ পাঠাগার, স্নানাগার ভ্রমণের জন্য আরাম এবং স্বাস্থ্য বা সৌন্দৰ্য্য উদ্দেশ্যে নিৰ্ম্মিত কোন গৃহও নাই। পুরুষগণ অৰ্দ্ধ উলঙ্গ, লেংটা পরিয়া থাকে ; স্ত্রীলোক ও তথৈবচ” । গুণের মধ্যে, বাবর লক্ষ্য করিয়াছেন, দেশটি প্রকাণ্ড, স্বর্ণ রৌপ্য প্রচুর এবং অনেক শ্রম জীবী লোক আছে, যাহাঁদের দ্বারা কৃষি-বাণিজ্যাদির উন্নতিসাধন করা যাইতে পারে। মোগল-বিজেতা প্রথমে এই ভাবে ভারতকে দর্শন করিলেন ; মোগল