পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫৪২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(? - 8 বাঙ্গলার ইতিহাস । * শ, অঞ্চ । ধৰ্ম্মবিষয় ভিন্ন অন্তরূপেও মুসলমানের প্রভাব ও মুসলমানী শিক্ষায় হিন্দু সমাজ যথেষ্ট উপকৃত হইয়াছিল। চিকিৎসা ও অঙ্কশাস্ত্র আরবাগণ প্রাচীন ভারত হইতে গ্রহণ করিলে ও তাহদের হস্তে উহার সমধিক উন্নতি সাধিত হইয়াছিল। রাজনৈতিক ইতিহাস আলোচনা এদেশে মুসলমানেরই আনীত । যুদ্ধকার্য্যে মুসলমান বিজেতৃগণই প্রথমে বারুদ ও বন্দুকের ব্যবহার করেন। কাচ, কাগজ, বাতি প্রভৃতির নামে স্পষ্টই দৃষ্ট হয়, এই সকল দ্রব্য নবাগত ; বিদেশীয় মুসলমান অধিকারেই উহাদের প্রথম প্রচার। তদ্ভিন্ন নানা প্রকারশিল্প ও কারুকার্য ও মুসলমান-হস্ত হইতে আদত্ত। মুসলমান রাজ্যবিস্তারের প্রথম দিকে তেীৰ্য্যত্রিক মুসলমান-শাস্ত্রসঙ্গত নহে বলিয়া ধারণা থাকায়, সঙ্গীতের চর্চা না থাকিলেও পরবর্তী কালে মুসলমান-রাজদরবারেই সঙ্গীত ও অন্তান্ত কলা-বিদ্যার উৎকর্ষ সাধিত হয়। প্রাচীন ভারতে সঙ্গীত চর্চার যে পরিমাণ উন্নতি হইয়াছিল, বিজেতা মুসলমানের হস্তে তাহার অপব্যবহার হয় নাই। পাঠান রাজত্বের উন্নতির দশায় বলবন বাদশাহের রাজাকালে প্রসিদ্ধ সঙ্গীতবে জ্ঞা কবি আমির খস্রু ভারতীয় সঙ্গীতের সাহায্যে মুসলমানী রাগ-রাগিণীর সংস্কারসাধন করেন। আকবর বাদশাহের সময় হইতে ভারতীয় সঙ্গীতের চরম উন্নতি। স্থাপত্য ও চিত্রবিদ্যা ও মুসলমানের হস্তে উৎকর্ষ লাভ করিয়াছিল। বহির্বাণিজ্যে মুসলমানেরই কৃপায় বিদেশীয় দ্রব্যের উপভোগ সম্ভব হইয়াছিল। মুসলমানই এদেশে উৎকৃষ্ট রাজপথ, সরাই, খাল প্রভৃতির প্রথম প্রবর্তক। বস্তুতঃ জগতের ইতিহাস পৰ্য্যালোচনা করিলে অস্ত্ৰ সমসাময়িক বিজেত্বগণ যে বিজিত জাতিকে মুসলমানের অন্ততঃ মোগলরাজের অপেক্ষা অধিক শ্রদ্ধার চক্ষে দেখিয়াছেন, তাহার প্রমাণ পাওয়া যায় না। এক্ষণে মুসলমান অধিকারে বঙ্গের অবস্থা আলোচিত হইতেছে। প্রাথমিক পাঠান যুগে বঙ্গ-বিজেতা মুসলমান সামন্তবর্গ (আমির ও মালিক্ ) বিজিত অংশে জায়গীর স্বরূপে অনেক ভূভাগ গ্রহণ করিয়া, দেশ-শাসনে সহায়তা করিয়াছিলেন । সমগ্র বঙ্গ কোন কালেই মুসলমানের পদানত হয় নাই,প্রারস্তেই উল্লেখ করা হইয়াছে। প্রথম মুসলমান বিজয়ের দেড়শত বর্ষ পরে পূর্ববঙ্গ অধিকৃত হয় ; কিন্তু প্রত্যন্ত হিন্দুরাজ্যগুলি পাঠান অধিকার কালে স্বাধীনত রক্ষা করিয়া আসিয়াছিল। পশ্চিমে সাওতাল-পরগণার জঙ্গল ভূমি, পঞ্চকোট ও বিষ্ণুপুর মুসলমান অধিকারের শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র ছিল । দক্ষিণ পশ্চিমে ময়ূরভঞ্জ প্রভৃতি পার্বত্য প্রদেশের কথা দূরে থাকুক, মেদিনীপুর এবং