পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 * বাঙ্গলার ইতিহাস । 를 ব্যক্তিকে নায়েব দেওয়ান করিয়া বিহারে নিযুক্ত রাখিলেন। এইরূপে তিন প্রদেশেই দেওয়ানের তীক্ষ দৃষ্টি ও কাৰ্য্যতৎপরতা সবিশেষ অনুভূত হইল। বর্ষে বর্ষে রাজস্বের সম্যক উন্নতিসাধন হইতে লাগিল। তখন দক্ষিণপথের যুদ্ধের নিমিত্ত আরঙ্গজেবের অত্যন্ত অর্থাভাব ; এ জন্য বাঙ্গলার সুব্যবস্থা ও অর্থাগম দেওয়ানের পক্ষে ক্রমশঃ অধিকতর শুভশংসী হইল। তিনি বাদশাহদরবার হইতে মোতোমন উল মুলক আলাউদ্দৌলা জাফর খা নসিরী নাসিরজঙ্গ মুর্শিদকুলী খাঁ (১) এই বহুবাড়ম্বরযুক্ত উপাধি ও সাতহাজারী মনসবী প্রাপ্ত হইলেন ( ২ ) । এখন কাৰ্য্যতঃ তিন মুবার সমগ্র কর্তৃত্ব র্তাহার হস্তেই হস্ত হইল। সুলতান আজিমুশ্বান পাটনায় নামমাত্র সুবাদার, এবং ফররোথশের বঙ্গে পুত্তলিকাবৎ নায়েব ( প্রতিনিধি ) নাজিম হইয়া নিজ নিজ ক্ষুদ্র দরবারে বাদশাহী চাল দেখাইতে লাগিলেন। ১৭০৭ খৃষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারী (২৮শে জেকুদ, ১১১৮ হি: ) বাদশাহ আরঙ্গজেব আলমগীর ৯২ বৎসর বয়সে পঞ্চস্বপ্রাপ্ত হইলেন (৩)। সমগ্র ভারতের একচ্ছত্রীকরণমানসে তিনি ত্রয়োবিংশ বর্ষ পূৰ্ব্বে যে দাক্ষিণাত্যবিজয়কামনায় অগণিত মোগলবাহিনী সঙ্গে সোৎসাহে গমন করিয়াছিলেন, সেই স্থানেই অবশিষ্ট জীবন নানা ক্লেশে অতিবাহিত করিয়া, আপন নশ্বর মৰ্ত্তদেহ রাখিয়া গেলেন। দক্ষিণাপথের মুসলমানরাজশক্তি সম্পূর্ণভাবে মোগলের পদানত হইলেও, যে ‘মহারাষ্ট্র-মুষিকের উচ্ছেদসাধনের জন্য বর্ষীয়ান বাদশাহ এই সুদীর্ঘকাল ধরিয়া সমরক্লেশ সহ করিলেন, তাহাদের দমন অসাধ্য হইল ; এখন হতাশদ্বদয়ে ক্ষীণশরীরে রাজধানীর দিকেই প্রত্যাগমন করিতেছিলেন ; পথিমধ্যে বহুদিনের সঙ্গী জীবনীশক্তি একবারে জবাব দিয়া বসিল । শরীর নিতান্ত অসুস্থ ও মৃত্যু আসন্ন বুঝিতে পারিয়া পুত্ৰ আজিম শা ও কামবক্সকে আপন আপন কৰ্ম্মস্থানে প্রেরণ করিলেন। বৃদ্ধ পাপীর অনুতপ্ত হৃদয়ে পিতার প্রতি স্বীয় পূৰ্ব্বকৃত ব্যবহারের স্মৃতি জগন্ধক হইল। প্রতিদ্বন্দ্বী পুত্রদ্বয় নিকটে থাকিলে শাজাহানের শেষদশার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় আশঙ্কা মনে উদিত হইল। পক্ষান্তরে শক্রসস্কুল বিদেশে তাহার মৃত্যুর পর পুত্ৰগণের (১) সাম্রাজ্যের বিশ্বস্ত কৰ্ম্মচারী, রাষ্ট্রের গৌরব, যুদ্ধে বিজেতা, জাফর খা নসিরী। (২) মনসবী=সেনানায়কত্ব। এ স্থলে এই উপাধি সন্মানস্থচকমাত্র। (৩) মুতাক্ষরণের মতে মৃত্যুর তারিখ ২৭শে জেকদ। কিন্তু এ সম্বন্ধে কফি খ ও ইরাদৎ বা একমত, এবং প্রামাণিক বলিয়। এই মতই গ্রহণীয়। মৃত্যুকালে আরঙ্গজেবের বয়স কেহ বা ৮ম এবং কেহ মই বলেন ।