পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৫৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QS)o বাঙ্গলার ইতিহাস । ২• শ, অঃ। উপর পড়তা করিয়া আদায় হইবার নিয়মও ছিল । অঙ্গ দিকে হুবিধা ভোগ করিতে পাওয়ায়, প্রথমে এই নাজাই আদায় দেওয়া সমধিক কষ্টকর বলিয়া বিবেচিত না হইলেও, ইংরেজ অধিকারের প্রথম ভাগে পলাতক রায়তের সংখ্যা বৰ্দ্ধিত হওয়ায় এই ব্যবস্থা ক্রমে উৎপীড়নে পরিণত হইয়াছিল। মুসলমান অধিকারে দেয় রাজস্ব পরিশোধ করিতে না পারিলে, জমিদারী নিলাম হইবার প্রথা ছিল না। রাজা ভূম্যধিকারীর নিকট যে নিয়মে রাজস্ব আদায় লইতেন, জমিদার ও সেই নিয়মে রায়তের নিকট কর সংগ্ৰহ করিতেন। তম্বী তাগাদা যথেষ্টই ছিল, সময়ে সময়ে প্রজাগণকে শারীরিক কষ্ট ও অনুভব করিতে হইত ; কিন্তু বৰ্ত্তমান কালের মত তাহার “হাতে-ভাতে উভয় দিকে মারা যাইত না । গ্রাম্যসমিতির কল্যাণে উচ্ছেদ প্রায়ই সম্ভব হইত না। সাধারণ প্রজা স্বগ্রামনিবাসী মণ্ডলাদির নিকট যথেষ্ট সমবেদন পাইত, পরস্পর সাহায্য তৎকালে অদৃষ্টচর বস্তু ছিল না। এখনও পল্লীগ্রামে প্রজাবর্গের মধ্যে এরূপ সমবেদন বিরল নহে। জমিদারবর্গের হস্তে উৎপীড়নই যে একালে সাধারণ ছিল, তাহা নহে। পরিশিষ্ট্রে জমিদারী সনন্দে দৃষ্ট হইবে, বাদশাহী ফৰ্ম্মানের নির্দেশমত জমিদারগণ প্রজাবর্গের মঙ্গলামঙ্গল, ভূমির উন্নতি প্রভৃতি বিষয়ে সৰ্ব্বদা দৃষ্টি রাখিতে আদিষ্ট হইতেন। চিরাগত প্রথা ও পুরুষপরম্পরায় সম্বন্ধ থাকায় সেকালের বঙ্গীয় জমিদার ও প্রজায় বিবাদ বিসংবাদ অল্পই ছিল। পরন্তু জমিদার অত্যাচার করিলে, প্রতিকার সুদূরপরাহত বলিয়া প্রজাও ভূস্বামীরই কণ্ঠলগ্ন হইয়া পড়িত। চুরি ডাকাইতি নিবারণ বা শান্তিরক্ষার ভার একালে জমিদারের হস্তেই ন্যস্ত ছিল ; গ্রাম্য মণ্ডল বা মিৰ্দ্ধা, এ কাৰ্য্যে তাহার সহায়তা করিতেন। জমিদার ও মণ্ডল অসমর্থ হইলে বা অবহেলা করিলেই, থানাদার ফৌজদারের নিকট আবেদন করিত ; কচিং সদর পর্য্যন্ত, যাইতে হইত। গ্রামের মণ্ডল পঞ্চায়েং প্রভৃতির মীমাংসা বা শালিসী, একালের ক্রয়-বিক্রয়ের স্তন্ম বিচারের মত সমাজের প্রভূত ক্ষতিকর হইবার কথা নহে। জমিদারের দরবারে অভিযোগকারিগণের নিকট চৌথ বলিয়া কিছু ফি আদায় ( ) হইলেও জুকালের বিচারের মূলতুলনায় তাহ অকিঞ্চিৎকর বোধ হইবে । জমিদার অষ্টায়াচরণ করিলে, রাজদরবারেও তাহার প্রতিকার হইত। অতঃপর কৃষক ও সাধারণ শ্রমজীবিগণের আর্থিক অবস্থা সংক্ষেপে আলোচিত হইতেছে। (১) সম্পূর্ণ চতুর্থাংশই গৃহীত হইত না। অনেকে সাধারণ বিচারালয়ে এইরূপ চৌধ প্রথা ছিল বলিয়া নির্দেশ করিয়া ভ্রম করেন।