পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৬৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২য় অ । হুগলীর ফৌজদারী বিভ্ৰাট | 85 যেন দলীপ সিংহের হস্তেই ঐ পত্র প্রদত্ত হয় । দূর হইতে বাহাতে তিনি লক্ষ্যস্থানীয় হন, এজন্য তাহার মস্তকে একখানি লাল বর্ণের শাল জড়াইয়া দেওয়া হইল। পত্রবাহক উপদেশ মত সেনানিবেশের সম্মুখে সেলাম কুর্ণিশদি করিয়া কথোপকথনে প্রবৃত্ত হইল। এই সময়ে জনৈক সুদক্ষ ইউরোপীয় গোলন্দাজ লক্ষ্য স্থির করিয়া কামান ছাড়িল , দলীপ গোলার আঘাতে তৎক্ষণাৎ পঞ্চর প্রাপ্ত হইলেন। (১) দলীপ সিংহের মৃত্যুর পর নবাবী-সৈন্ত নায়কহীন হইয়া হুগলীর দুর্গমধ্যে আশ্রয় গ্রহণ করিল। অপস্থত ফৌজদার এই সুযোগে দিল্লী প্রস্থান করিলেন । কিন্তু তথায় গিয়া অনতিবিলম্বে তিনি কালগ্রাসে পতিত হইলেন। সমস্ত গোলযোগের মূল কিঙ্কর সেন, পূর্ব প্রভূর মৃত্যুর পরে বঙ্গে প্রত্যাগত হইয়া নবাব কুলী খাঁর নিকটে উপনীত হইলেন। অজ্ঞাতনামা গ্রন্থকার লিথিয়াছেন, “কিঙ্কর সেন নিৰ্ভয়ে চেহেল স্থতুন দরবারে উপস্থিত হইয়া নবাবকে বাম হস্তে সেলাম করিলেন। কারণ জিজ্ঞাসায় উত্তর দিলেন, যে হস্তে বাদশাহকে অভিবাদন করা হইয়াছে, তাহাতে কি করিয়া অঙ্গকে নমস্কার করিব ? মুর্শিদকুলী খাঁ উত্তর দিলেন,-কঙ্কর ত চিরদিন বিনামার তলেই পড়িয়া থাকে। যাহা হউক, পূর্বাবধি কিঙ্করের প্রতি সঞ্জীতক্রোধ হইলেও, নবাব প্রকাশে অনুগ্রহ দেখাইয়া তাহাকে হুগলী-চাকলার আহদাদারী বা রাজস্ব আদায়ের ভার প্রদান করিলেন। পরবর্ষে কিঙ্কর সেন মুর্শিদাবাদে আসিলে, তহবিল তস্রুপ প্রভৃতি অপরাধের ছলে তাহাকে কারারুদ্ধ করা হইল। তাহাকে ঢিলা পায়জামা পরাইয়া তাহার ভিতরে বিড়াল ছাড়িয়া দেওয়া হইল। লবণমিশ্রিত মাহিষ-দুগ্ধ ভিন্ন অন্ত খাদ্য দেওয়া হইত না ; এবং যাহাতে উহ্য রীতিমত পান করান হয়, তজ্জন্ত মহশীল অর্থাৎ পরিদর্শক লোক নিযুক্ত হইল। এইরূপে কিঙ্কর সেনের ভয়ানক উদরাময় জন্মিল, এবং হুগলীতে ( ) তারিখ বাঙ্গালার গ্রন্থকার এই স্থানে লিথিয়াছেন যে, ইউরোপীয়গণের দত্ত লম্বছর নামক এক কামানের গোলায় এই কাৰ্য্য নিপন্ন হয়। উহার গোলা দেড় ক্রোশ পৰ্য্যন্ত যাইত। সে কালে এত দূরে লক্ষ্য করা সম্ভব ছিল কি না, বিচাৰ্য্য। ইয়ার্ট বলেন, সম্মুখভাগে কিঞ্চিং অগ্রবত্ত একটি কামান হইতে এক জন ফরাসী লক্ষ্য করেন। এ কথা অবষ্ঠ মূল গ্রন্থে নাই।