পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Go 8 বাঙ্গলার ইতিহাস । ** * মানব সমাজের কল্যাণসাধনে ও বিশ্বস্রষ্টার গৌরবপ্রচারসৌকর্ঘ্যে প্রযুক্ত হইত। পৃথিবীতে ন্তায়বিচারের জন্ত যে সমস্ত পুণ্যশ্লোক নরপতিগণের নাম চিরস্মরণীয় আছে, কুলী খাঁর বিচার তাহদের মত স্বযুক্তিপূর্ণ ও দ্যায়পর বলিয়া লোকে সসন্ত্রমে গ্রহণ করিত। তিনি সপ্তাহে দুই দিন বিচারাসনে বসিয়া স্বয়ং বিচারকার্য্য নিৰ্ব্বাহ করিতেন। বিচারে তাহার নিরপেক্ষতা প্রবাদবাক্যের মত হইয়াছে। দ্যায়বিচারবিতরণের প্রবৃত্তি তাহার এতই বলবতী ছিল যে, দক্ষিণাপথে কার্য্য করিবার সময়ে বিষম অপরাধের নিমিত্ত (১) সরার নির্দেশমতে শাস্তিবিধান করিয়া স্বীয় একমাত্র পুত্রের প্রাণদণ্ডের । আদেশ দিয়াছিলেন। কেবল বিচার ও আদেশ দিয়াই তিনি নিশ্চিন্ত হইতেন না ; উহা যথাযথ পালিত হইল কি না, সে বিষয়েও তাহার রীতিমত দৃষ্টি ছিল। এই কারণে তাহার রাজ্যকালে অপরাধীর সংখ্যার হ্রাস হইয়াছিল। অত্যাচারী ব্যক্তিগণ ত্রাসে কম্পিতকলেবর হইত। সে সময়ে দুৰ্ব্বলের প্রতি বলবানের হস্ত এতই সংযত ছিল যে, “বাঘ বক্রী এক ঘাটে জলপান করিত-স্তোন ও চটক এক কুলায়ে প্রণয়ে বাস করিত, প্রজাবর্গের উপর জমিদারগণের কোনও অত্যাচার হইবার উপায় ছিল না। জমিদারের উকীলগণ মুর্শিদাবাদে চেহেল স্থতুন দরবারের সম্মুখের পথে সৰ্ব্বদা অনুসন্ধান রাখিতেন, তাহদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগকারী উপস্থিত আছে কি না। অভিযোগকারীর দর্শন পাইলে যে কোন উপায়ে হউক, সন্তুষ্ট করিয়া তাহাকে ফিরাইয়া লইয়া যাইতেন ; কারণ, অবস্থা কুলী খাঁর নিকট অনুগ্রহ লাভ করিবে না, অপরাধের প্রমাণ হইলে শাস্তি গুরুতর হইবে, ইহা সকলেই অবগত ছিলেন।” “রাজ্যমধ্যে প্রজাবৃন্দের যাহাতে অন্নকষ্ট উপস্থিত না হইতে পারে, সে বিষয়ে মুর্শিদকুলী খাঁর বিশেষ দৃষ্টি ছিল। তাহার সময়ে দুর্ভিক্ষ কাহাকে বলে, লোক সমাজে তাহা পরিজ্ঞাত ছিল না। খাদ্যসামগ্রীর বাণিজ্যবিষয়ক কৈবল্য তাহার অনুমোদিত ছিল না। তিনি স্বয়ং সৰ্ব্বদা বাজার দরের প্রতি দৃষ্টি রাখিতেন ; শস্তাদির মূল্যের সাময়িক বিবরণী সংগ্ৰহ করিবার নিয়ম ছিল। কোনও ব্যবসায়ী নিরূপিত বাজার দরের উপরে মূল্য চড়াইলে বা অধিক লাভের আকাঙ্ক্ষায় বিক্রয় স্থগিত রাখিলে যথেষ্ট শাস্তি পাইত। আর এরূপ ( ১ ) প্রবাদ আছে, তাহার পুত্র অন্তের বিবাহিত পত্নীর ধৰ্ম্মনাশ করিয়াছিল।