পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২র অঃ । কুলী খ ও কাজী শরফ। (tన বাট হইতে বহিস্কৃত করিয়া দেন। সে তৎপরে কতকগুলি ইষ্টক সংগ্ৰহ করিয়া বৃন্দাবনের বাটীর সম্মুখের পথে একটি প্রাচীর প্রস্তুত করিয়া তাঁহাই উহার মসজীদ বলিয়া লোককে তথায় উপাসনা করিবার জন্ত আহবান করিত। বৃন্দাবন পথে বাহির হইলেই সে বিষম চীৎকার করিয়া আজান দিত। বৃন্দাবন বিরক্ত ও ক্রুদ্ধ হইয়া তাহার প্রাচার ভাঙ্গিয় তাহাকে তথা হইতে তাড়াইয়া দেন। ভাক্ত ফকীর মুর্শিদকুলীর নিকট অভিযোগ উপস্থিত করিল। মুসলমান পণ্ডিতসভাধিষ্ঠিত প্রধান কাজী শরফ বিচার করিয়া বৃন্দাবনের প্রাণদণ্ডের আদেশ দিলেন। কুলী খাঁ, এ স্থলে প্রাণদণ্ড বাঞ্ছনীয় নহে বলিয়া, হিন্দু বেচারার প্রাণরক্ষার জন্ত কাজী সাহেবকে জিজ্ঞাসা করিলেন, কোন উপায়ে সরার নির্দিষ্ট কঠোর শাস্তির পরিবর্তন করা যায় কি না ? ধৰ্ম্মাবতার কাজী উত্তর দিলেন, উহার জন্ত অনুরোধকারীর প্রাণবধ করিতে যতক্ষণ সময় লাগে, ততটুকু অপেক্ষা করা যাইতে পারে। কুলী খাঁর সমস্ত যত্বই বিফল হইল ( )। সুলতান আজিমুম্বান বাদশাহের নিকট বৃন্দাবনের জন্ত ক্ষমা প্রার্থনার অনুরোধ করিলেও কোন ফল হইল না। কারণ, কাজী স্বহস্তে বাণ নিক্ষেপ করিয়া অভাগার প্রাণবধ করিলেন ; ধৰ্ম্মসঙ্গত আইনের প্রতি কাজীর ভক্তি এতই অচলা ! এই হত্যাকাণ্ডের পর আজিমুশ্বান বাদশ আরঙ্গজেবের নিকট জ্ঞাপন করিলেন, শরফ ক্ষিপ্ত হইয়া স্বয়ং বৃন্দাবনকে নিহত করিয়াছেন। বাদশা ঐ পত্রের উপর স্বহস্তে লিথিয়া পাঠাইলেন, "কাজী শরফ খোদাক তরফ । আরঙ্গজেবের মৃত্যু হইলে কাজী শরফ, কৰ্ম্ম ত্যাগ করিলেন। কুলী খাঁর শত অনুনয়েও তাহার মন টলিল না।” “মুর্শিদকুলী খাঁর রাজাকালে প্রজার পীড়াদায়ক করসমূহ উঠাইয়া দেওয়া হয়। কাজীগণের মীরান ও ইহতিসাব এ সময়ে প্রবর্তিত হয় নাই। পুরুষানুক্রমে র্যাহার কাজীর কার্য্য করিয়া আসিতেছিলেন, তন্মধ্যে যাহার ধৰ্ম্মপথে থাকিয়া সদ্ব্যবহার করিতেন, এবং প্রধান কাজীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইতেন, তাহদের কুত্ৰাপি কৰ্ম্মচুতি ঘটে নাই। সংলোক ভিন্ন অন্ত কেহ কাজীর পদে নুতন প্রতিষ্ঠিত হইতেন না। মুর্শিদকুলী খাঁ বৃদ্ধদশায় স্বীয় কবরস্থান, মসজীদ ও তৎসংলগ্ন কাঠর (১) কুলী খাঁ এ সময়ে দেওয়ান মাত্র ছিলেন, দেখা যাইতেছে।