পাতা:বাঙ্গলার ইতিহাস-অষ্টাদশ শতাব্দী-নবাবী আমল.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

と0 বাঙ্গলার ইতিহাস । **: ठा । ( বাজার-সমন্বিত চতুষ্কোণ ক্ষেত্র ) প্রভৃতি নিজের জীবনকালেই প্রস্তুত করাইয়া যান। তাহার ইচ্ছানুসারে মসজীদের প্রবেশদ্বারের প্রশস্ত সিড়ির নীচে একটি গৃহ নিৰ্ম্মিত হয়। তাহার আদেশ ছিল, সেই নিয়ের গৃহে তাহাকে সমাহিত করা হইবে। মসজীদ-দর্শনার্থী যাত্রী ও উপাসকগণের পদরেণু তাহার কবরস্থানের উপর পতিত হয়, ইহাই তাহার অভিপ্রেত। মসজীদের দ্বারের উপরে যে পারসী কবিতা লিখিত রহিয়াছে, তাহাও এই অভিপ্রায়ে গৃহীত। সেটি এই,–“স্বর্গ ও মর্ত্য উভয় লোকের গৌরব, আরবের মহম্মদের জয়। যে ব্যক্তি তাহার দ্বারের ধূলি নহে, তাহার মস্তকে ধূলিরাশি বর্ষিত হউক।” (১) মক্কার সুপ্রসিদ্ধ প্রধান মসজীদের অনুকরণে এই প্রকাণ্ড মসজীদ নিৰ্ম্মিত হয়, এইরূপ কিম্বদন্তী রহিয়াছে। কুলী খাঁর কীৰ্ত্তিস্তম্ভ এই প্রধান মসজীদের একটি চিত্র ও ইহার বিস্তৃত বিবরণ অন্তর দেওয়া হইবে (২)। ১১৩৭ হিঃ অব্দে (১৭২৩ খ্রীঃ) এই মসজীদ-নিৰ্ম্মাণ শেষ হয়। মুর্শিদকুলী ইহার দুই বৎসর পরে, ১১৩৯ হিঃ অব্দে, পরলোকগত হন। এই সুবিখ্যাত মসজীদের নির্মাণ-বিষয়ে তারিখ বাঙ্গালার অজ্ঞাতনাম লেখক নিম্নলিখিত অভূত প্রবাদ লিপিবদ্ধ করিয়াছেন ;–“মুর্শিদকুলী স্বীয় মৃত্যুকাল নিকটবৰ্ত্তা জানিয়া একটা সমাধি-মন্দির, মসজীদ ও তৎসংলগ্ন কাঠর নিৰ্ম্মাণের আদেশ দিলেন। ইস্মাইল ফরাসের পুত্র মুরদের প্রতি ইহার তত্ত্বাবধানের ভার অর্পিত হইল। মুরাদ নগরের পূৰ্ব্বভাগে খাস তালুকের মধ্যে ইহার স্থান মনোনীত করিল। চতুর্দিকের হিন্দু দেবালয় ভাঙ্গিয়া মন্ত্রজীদের উপকরণ সংগৃহীত হইল। জমিদার ও অন্তান্ত হিন্দুগণ মন্দিররক্ষার্থ প্রভূত অর্থ ও নিজ ব্যয়ে উপকরণ সংগ্ৰহ করিয়া দিবার ভার গ্রহণে প্রস্তুত হইলেও, সে তাহাতে কর্ণপাত করিল না। তাহদের অনুনয়ে বা উৎকোচে কোন ফল হইল না। মুর্শিদাবাদ সহরের ও তাহার চতুঃ পাশ্বের চারি পাঁচ দিনের পথ পর্যন্ত যত দেবালয় ছিল, সমস্তই চূর্ণ করা হইল । সুদুর পল্লীগ্রামে হিন্দুগৃহস্থের বাসগৃহ দেবোদেশে দত্ত বলিয়া ভাঙ্গিয় ফেলিবার ভয় প্রদর্শন করিলে, তাহারা প্রচুর অর্থদানে পরিত্রাণ পাইল । (১) ঢাকায় শায়েস্তা খাঁর কন্যা পরী বিবির সমাধিমন্দিরের উপরেও এই কবিতা লিখিত অাছে। (২) নবাবী আমলের স্থাপত্য ও চিত্রবিদ্যা।”