পাতা:বাঙ্গলার পরিচিত পাখী.djvu/৭১

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৬
বাঙ্গলার পরিচিত পাখী

করিলেও জরিমানা হয়। এদেশে বন্দুকের লাইসেন্সের সঙ্গে অবধ্য পাখীর ফিরিস্তি দেওয়া হয়। তাহাতে নীলকণ্ঠের নাম আছে। ভারতের বন্দরে বন্দরে কাষ্টম বিভাগ হইতে কড়া পাহারার বন্দোবস্ত আছে, যাহাতে উপকারী পাখীর পালক রপ্তানী না হয়। কিন্তু উৎকোচের লীলাভূমি ভারতবর্ষে নিষেধ ও পাহারা বজ্রআঁটুনীর ফস্কা গেরোমাত্র। কৃষির পক্ষে হলাহলসম কীটাদি উদরে ধারণ করে বলিয়া হিন্দুরা বোধ হয় একে নীলকণ্ঠ নাম দিয়াছেন। হিন্দুর শাস্ত্রেও এ পাখী অবধ্য।

 নীলকণ্ঠের গতিতে ও উড়িবার ভঙ্গীতে কেমন যেন একটা জড়তা ও আলস্যের ভাব আছে। যখন সে শীকারের পশ্চাতে ধাবিত হয় তখনও ক্ষিপ্রতা দেখা যায় না। তাড়াতাড়ি কিছু করা যেন এর প্রকৃতি নহে। ধরিত্রীপৃষ্ঠ হইতেই ইহা খাদ্য সংগ্রহ করে। কিন্তু শালিকের মত ছুটাছুটি করে না। মাছরাঙা পাখীর মত কোনও একটি উচ্চস্থানে সে নিতান্ত ভাল মানুষটির মত চুপ করিয়া বসিয়া থাকে। তখন মনে হয় বুঝি ঘুমাইয়া পড়িয়াছে। হঠাৎ দেখি সে ধীরে, সুস্থে, মন্থরগতিতে ভূমিতে অবতরণ করিল। হয়তো কোনও পতঙ্গ তৃণক্ষেত্রে একটু বেশী রকম আত্মপ্রকাশ করিয়া ফেলিয়াছিল। মুহূর্ত্ত মধ্যে তাহার ভবলীলা সাঙ্গ হইল।

 বৈশাখের শেষভাগ হইতে নীলকণ্ঠ পঞ্চশরের আঘাতে চঞ্চল হইয়া উঠে। তখন সে তাহার স্বাভাবিক জাড্য ত্যাগ করে। সেই সময় তাহার উৎপতনভঙ্গী দর্শনীয় হয়। সেই সময় শূন্য মার্গে উঠিয়া বারবার ডিগ্‌বাজী খাইয়া প্রণয়িণীর মন পাইতে চেষ্টা করে। এখানে বলিয়া রাখি যে, সাধারণতঃ পক্ষিজগতে স্ত্রীপুরুষের বর্ণ একই প্রকার হয় না। কিন্তু নীলকণ্ঠদের স্ত্রীপুরুষ একই প্রকার দেখিতে।

 দেয়ালের গর্ত্তে, কিংবা কোনও গাছের কোটরে অথবা কোনও