এই পাখী বাংলার প্রাকৃতিক শোভার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। ইহার ঘনকৃষ্ণবর্ণ, ছিপছিপে ঋজু দেহ, কল্কার মত সুদীর্ঘ পুচ্ছ—এবং ক্ষিপ্র, চঞ্চল উৎপতন-ভঙ্গি ইহার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করিবেই। অথচ বাঙ্গালী কবিদের প্রকৃতিবর্ণনার মধ্যে এই পাখীর উল্লেখ পাই না। শুধু সতেন্দ্রনাথ দত্ত একটি কবিতায় এর উল্লেখ পাই, তাঁহার “কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে শ্যামল—” কবিতাটিতে জিজ্ঞাসা করিয়াছেন কোথায় এমন “ফিঙ্গে গাছে গাছে নাচে”। তাঁহার প্রকৃতই সৌন্দর্য্যবোধ ছিল, পর্য্যবেক্ষণ শক্তি ছিল, তাই আমাদের গ্রাম্য প্রকৃতির মধ্যে এই কুচকুচে কালো পাখীটির বেপরোয়া গতিভঙ্গির সুষমা তাঁহার চোখে ধরা পড়িয়াছিল। যাঁহারা রেলপথে যাতায়াত করেন, এই পাখী তাঁহাদের দৃষ্টি এড়াইতে পারে না। কেন না, লাইনের ধারে ধারে, টেলিগ্রাফের তারের উপর বা রেল কোম্পানীর জমির সীমা-নির্দ্দেশক তারের বেড়ার উপর দুই তিনটা খুঁটির ব্যবধানে এক একটি বা এক জোড়া ফিঙ্গে অবশ্য দেখা যাইবে। ইহার দেহায়তন বুলবুল অপেক্ষা অধিক নহে। কিন্তু এর দীর্ঘ পুচ্ছখানির জন্য ইহাকে বড় দেখায়। ইহার পুচ্ছের সব পতত্র সমান নহে, বাহিরের পতত্রগুলি দীর্ঘতম এবং তারপর ভিতর দিকে ক্রমশঃ দুই দিকেই হ্রস্ব হইয়া মাঝখানে আসিয়া হ্রস্বতম হইয়াছে, ফলে পুচ্ছের দুইদিকে কলকার আকার প্রাপ্ত হইয়াছে। এই আর একটি পাখী যাহার স্ত্রী পুরুষ একই রকম দেখিতে।
ঘোরতর কৃষ্ণবর্ণ এই পাখীটির মেজাজ কিন্তু একেবারে আহেল