পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০
বাঙ্গালার ইতিহাস
১০

গবাক্ষ থাকে। ইঙ্গরেজেরা কলহকারি দুর্ব্বৃত্ত সৈন্যদিগকে ঐ গৃহে রুদ্ধ করিয়া রাখিতেন। মুসলমানেরা, এই দারুণ গ্রীষ্মসময়ে, সেই সমস্ত ইউরোপীয় বন্দীদিগকে এমত ক্ষুদ্র গৃহে নিক্ষিপ্ত করিল।

 সেই রাত্রিতে যন্ত্রণার পরিসীমা ছিল না! বন্দীর অতি ত্বরায় ঘোরতর পিপাসায় কাতর হইল; আর রক্ষকদিগের নিকট বরিস্কার প্রার্থনা করিয়া যে জল পাইল, তাহাতে কেবল তাহাদিগকে ক্ষিপ্তপ্রণয় করিল। প্রত্যেক ব্যক্তিই, সম্যক্রূপে নিশ্বাস আকর্ষণ করিবার আশয়ে, গবাক্ষের নিকটে যাইবার নিমিত্ত বিবাদ করিতে লাগিল; এবং যন্ত্রণায় অধৈর্য্য হইয়া রক্ষিদিগকে প্রার্থনা কবিতে লাগিল, তোমরা আমীদিগের উপব গুলী করিয়া এই দুঃসহ ক্লেশের অবসান কর। ক্রমে ক্রমে এক এক জন করিয়া অনেকেই পঞ্চস্থ পাইয়া ভূতলশায়ী হইল। তখন অবশিষ্ট ব্যক্তিরা, সেই শবরাশির উপর দাড়াইয়া, নিশ্বাস আকর্ষণের অনেক স্থান পাইল; তাহাতেই কয়েক জন জীবিত থাকিল। পর দিন প্রাতঃকালে, সেই গৃহের দ্বার উদঘাটিত হইলে, দৃষ্ট হইল এক শত ছচল্লিশের মধ্যে কেবল তেইশ জন মাত্র জীবিত আছে। অন্ধকূপহত্য নামে যে অতি ভয়ানক ব্যাপার প্রসিদ্ধ আছে, সে এই! এই হত্যার নিমিত্তই সিরাজউদৌলার কলিকাতা আক্রমণ শুনিতে এত ভয়ানক হইয়া রহিয়াছে। উক্ত ঘোরতর অত্যাচার প্রযুক্তই, এই বৃত্তান্ত সর্ব্বদেশীয় লোকের অন্তঃকরণে জদ্যাপি দেদীপ্যমান আছে; এবং সিরাজউদৌলাও