পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২ অ
বাঙ্গালার ইতিহাস।
২৯

 প্রভাত হইবামাত্র যুদ্ধারম্ভ হইল। ক্লাইব উৎকণ্ঠিত চিত্তে মীরজাফরের ও তদীয় সৈন্যের আগমন প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন। কিন্তু তখন পর্যন্তও তাঁহার ও তদীয় সৈন্যের কোন চিহ্ন দেখা গেল না। যুদ্ধক্ষেত্রে নবাবের পঞ্চদশ সহস্র অশ্বারোহ ও পঞ্চত্রিংশৎ সহস্র পদাতিক সৈন্য উপস্থিত হইয়াছিল। কিন্তু তিনি স্বয়ং, চাটুকার বর্গে বেষ্টিত হইয়া, সকলের পশ্চাদ্ভাগে তাঁবুমধ্যে ছিলেন। মিরমদন নামক একজন সেনাপতি যুদ্ধ আরম্ভ করিয়াছিলেন। মিরজাফর আত্মসৈন্য সহিত তথায় উপস্থিত ছিলেন কিন্তু যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়েন নাই।

 বেলা প্রায় দুই প্রহরের সময়, কামানের গোলা লাগিয়া সেনাপতি মিরমদনের দুই পা উড়িয়া গেল। তিনি তৎক্ষণাৎ নবাবের তাবুতে আনীত হইলেন এবং তাঁহার সম্মুখেই প্রাণত্যাগ করিলেন। তদৃষ্টে নবাব যৎপরোনাস্তি ব্যাকুল হইলেন এবং ভৃত্যদিগকে বিশ্বাসঘাতক বলিয়া সন্দেহ করিতে লাগিলেন। তখন তিনি মীরজাফরকে ডাকাইয়া আনিলেন; এবং তাঁহার চরণোপরি স্বীয় উষ্ণীষ স্থাপন করিয়া, অতিশয় দীনতা প্রদর্শন পূর্ব্বক এই প্রার্থনা করিতে লাগিলেন যে, নিদান আমার মাতামহের অনুরোধেও, আমার অপরাধ ক্ষমা করিয়া, এই বিষম বিপদের সময় সহায়তা কর।

 জাফর এই অঙ্গীকার করিলেন আমি আত্মধর্ম্ম প্রতিপালন করিব; এবং তাহার প্রমাণ স্বরূপ নবাবকে পরামর্শ দিলেন, অদ্য বেলা অত্যন্ত অধিক হইয়াছে; সৈন্য সকল ফিরাইয়া আনুন। যদি জগদীশ্বর কৃপা করেন