পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/৪৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।
৩ অ

রায়দুর্লভের সর্ব্বনাশের চেষ্টায় প্রবৃত্ত হইলেন। ফলতঃ, তাঁহার উপর মীরজাফরের এমত বিষম বিদ্বেষ জন্মিয়াছিল যে তাঁহার সহিত সিরাজউদ্দৌলার কনিষ্ঠ ভ্রাতার বন্ধুতা আছে, এই সন্দেহ করিয়া, সেই অল্পবয়স্ক নিরপরাধ রাজকুমারের প্রাণবধ করিলেন। রায়দুর্লভও কেবল ইঙ্গরেজদিগের শরণাগত হইয়া সে যাত্রা পরিত্রাণ পাইলেন।

 রাজা রামনারায়ণ বহুকালাবধি বিহারের ডেপুটী গবর্ণর ছিলেন। নবাব মনস্থ করিলেন, তাঁহাকে পদচ্যুত করিয়া তদীয় সমুদায় সম্পত্তি অপহরণ করিবেন, ও ' আপন ভ্রাতাকে গবর্নরী পদ দিবেন। ক্লাইবের মতে, মীরজাফরের ভ্রাতা মীরজাফর অপেক্ষাও নির্ব্বোধ। নবাব মেদিনীপুরের গবর্ণর রাজা রামসিংহের ভ্রাতাকে কারাগারে রুদ্ধ করিলেন; তাহাতে রামসিংহও তাঁহার প্রতি ভগ্নম্নেহ হইলেন। পূর্ণিয়ার ডেপুটী গবর্ণর অদল সিংহ মন্ত্রিদিগের কুমন্ত্রণা অনুসারে রাজবিদ্রোহে অভ্যুত্থান করিলেন।

 এইরূপে, মীরজাফরের সিংহাসনারোহণের পর পাঁচ মাসের মধ্যে, তিন প্রদেশে তিন বিদ্রোহ ঘটে। তখন তিনি ব্যাকুল হইয়া, বিদ্রোহ শান্তির নিমিত্ত, ক্লাইবের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করিলেন। তৎকালে ক্লাইব বাঙ্গালাতে সকলেরি বিশ্বাসভূমি ছিলেন। এই বিশ্বাস অপাত্রে বিন্যস্ত হয় নাই। যেহেতু তিনি উপস্থিত তিন বিদ্রোহের শান্তি করিলেন, অথচ এক বিন্দুও রক্তপাত হইল না।