পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
বাঙ্গালার ইতিহাস।
৫অ

টের নিকট হইতে কোম্পানির নামে তিন প্রদেশের দেওয়ানী প্রাপ্তি সেই সর্ব্বাপেক্ষা গুরুতর। পূর্ব্বে লিখিত হইয়াছে, সম্রাট্ অঙ্গীকার করিয়াছিলেন ইঙ্গরেজেরা যখন প্রার্থনা করিবেন তখনি তিনি তাঁহাদিগকে তিন প্রদেশের দেওয়ানী দিবেন। অতএব ক্লাইব, এলাহবাদে তাঁহার সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, এই প্রতিজ্ঞা পরিপুরণার্থে প্রার্থনা করিলেন। তিনিও তৎক্ষণাৎ সম্মত হইলেন। ১২ই আগষ্ট, সম্রাট্ কোম্পানি বাহাদুরকে বাঙ্গালা, বিহার, উড়িষ্যার দেওয়ানী প্রদান করিলেন; এবং ক্লাইব স্বীকার করিলেন উৎপন্ন রাজস্ব হইতে সম্রাটকে প্রতি মাসে দুই লক্ষ টাকা দিবেন।

 এই স্থলে ইহা উল্লেখ করা উপযুক্ত বোধ হইতেছে যে সম্রাট্ তৎকালে আপন রাজ্যে পলাতক স্বরূপ ছিলেন; সুতরাং তাঁহার রাজকীয় কোন পরিচ্ছদাদি ছিল না। তন্নিমিত্তে ইঙ্গরেজদিগের খানা খাইবার দুই মেজ একত্রিত ও কার্ম্মিক বস্ত্রে মণ্ডিত করিয়া সিংহাসন প্রস্তুত করা গেল। সমস্ত ভারতবর্ষের সম্রাট তদুপরি উপবিষ্ট হইয়া বার্ষিক দুই কোটি টাকার রাজস্ব সহিত তিন কোটি প্রজা ইঙ্গরেজদিগের হস্তে সমর্পণ করিলেন। তৎকালীন মুসলমান ইতিহাসলেখক এই বিষয়ে ইঙ্গিত করিয়াছেন যে সময়ান্তরে এরূপ গুরুতর ব্যাপার নির্ব্বাহ বিষয়ে কত কত নীতিজ্ঞ মন্ত্রী ও কার্য্যদক্ষ দূত প্রেরণ ও কত কত বাদানুবাদের আবশ্যকতা হইত। কিন্তু এক্ষণে ইহা এত অল্প সময়ে সম্পন্ন হইল যে এক পাল পশু অথবা একটা গর্দভ বিক্রয়ও ঐ সময় মধ্যে সম্পন্ন হইয়া উঠে না।