পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৮৩

মাতৃবিষ্ণু অভিন্ন। অতএব ইহা নিশ্চয় যে, ১৬৫ গৌপ্তাব্দের পরে পঞ্চবিংশ অথবা ত্রিংশতবর্ষ মধ্যে মালবদেশের ঐরকিণ (বর্ত্তমান ইরাণ) বিষয় গুপ্তসাম্রাজ্যবিচ্যুত হইয়া হূণরাজ তোরমাণের রাজ্যভুক্ত হইয়াছিল। ইহা হইতে অনুমান করা যাইতে পারে, যে যুদ্ধে গোপরাজ নিহত হইয়াছিলেন তাহার অব্যবহিত পরেই মালবদেশ ভানুগুপ্তের অধিকারচ্যুত হইয়াছিল। কোন্ সময়ে মধ্যদেশ গুপ্তরাজগণের হস্তবিচ্যুত হইয়াছিল, তাহা বলিতে পারা যায় না; তবে দামোদরপুরে আবিষ্কৃত তাম্রলিপি হইতে প্রমাণ হইতেছে যে, ভানুগুপ্ত ২১৪ গৌপ্তাব্দ (৫৩৩ খৃঃ অব্দ) পর্য্যন্ত জীবিত ছিলেন এবং এই সময় পর্য্যন্ত গৌড়দেশ তাঁহার অধিকারভুক্ত ছিল। ভানুগুপ্তের কোন মুদ্রা অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই।

 ভানুগুপ্তের জীবিতকালে অথবা তাঁহার মৃত্যুর অব্যবহিত পরে মালবরাজ যশোধর্ম্মদেব মগধ, গৌড় ও বঙ্গ অধিকার করিয়াছিলেন। তাঁহার মন্দশোরে আবিষ্কৃত থোদিতলিপি হইতে অবগত হওয়া যায় যে, হিমালয় হইতে মহেন্দ্রগিরি পর্য্যন্ত, লৌহিত্য বা ব্রহ্মপুত্রতীর হইতে পশ্চিমসমুদ্র পর্য্যন্ত তাঁহার অধিকার বিস্তৃত হইয়াছিল। যশোধর্ম্মদেবের যে শিলালিপিতে তাঁহার ব্রহ্মপুত্রতীর পর্য্যন্ত অধিকার বিস্তারের বর্ণনা আছে, তাহা ৫৮৯ বিক্রম সম্বৎসরে (৫৩২-৩৩ খৃঃ অব্দ) উৎকীর্ণ হইয়াছিল[১] কিন্তু দামোদরপুরে আবিষ্কৃত ভানুগুপ্তের তাম্রলিপি হইতে জানিতে পারা যায় যে, তিনি ২১৪ গৌপ্তাব্দে (৫৩৩ খৃঃ অব্দ) জীবিত

  1. আলৌহিত্যোপকণ্ঠাত্তলবনগহনোপত্যকাদামহেন্দ্রা-
    দাগঙ্গাশ্লিষ্টসানোস্তুহিনশিখরিণঃ পশ্চিমাদাপয়োধেঃ।
    সামন্তৈর্যস্য বাহুদ্রবিণহৃতমদৈঃ পাদয়োরানমদ্ভি-
    শ্চূড়ারত্নাংশুরাজিব্যতিকরশবলা ভূমিভাগাঃ ক্রিয়ন্তে॥
     —Corpus Inscriptionum Indicarum, Vol. III. p. 146.