পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
চতুর্থ পরিচ্ছেদ।
৮৫

চরমসীমায় উপনীত হইয়াছিল। খৃষ্টীয় চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শতাব্দীর যে সমস্ত নিদর্শন উত্তরাপথে আবিষ্কৃত হইয়াছে, তাহা দেখিলে স্পষ্ট বুঝিতে পারা যায় যে, এই যুগই ভারতীয়-শিল্পের চরম উন্নতির যুগ। গুপ্তাধিকারকালের বহু মন্দির, প্রাসাদ, ধাতু ও প্রস্তর-নির্ম্মিত মূর্ত্তি, স্তম্ভ ও খোদিত চিত্র (basrelief) আবিষ্কৃত হইয়াছে। মথুরায় ও বারাণসীতে গুপ্তাধিকারকালের শিল্প-নিদর্শন সর্ব্বাপেক্ষা অধিক পরিমাণে আবিষ্কৃত হইয়াছে। বঙ্গ ও মগধে আবিষ্কৃত নিদর্শনসমূহের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত অল্প হইলেও মূর্ত্তিগুলির শিল্প-চাতুর্য্য অতীব বিস্ময়জনক। গুপ্তাধিকারকালের একখানি প্রস্তরে খোদিত চিত্র (basrelief) ও একটি পিত্তল-নির্ম্মিত বুদ্ধমূর্ত্তির চিত্র প্রকাশিত হইল। প্রস্তরে খোদিত চিত্রটি পাটনা জেলার চণ্ডীমৌ গ্রামে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। ইহাতে “কিরাতার্জ্জুনীয়ের” দুইটি চিত্র আছে। প্রস্তরফলকের বামার্দ্ধে অর্জ্জুন যুদ্ধে পরাজিত হইয়া কিরাতরূপী মহাদেবের চরণ বন্দনা করিতেছেন ও দক্ষিণার্দ্ধে কিরাতরূপী মহাদেব সন্তুষ্ট হইয়া অর্জ্জুনকে আত্মস্বরূপ প্রদর্শন করিতেছেন, অর্জ্জুন কৈলাসপর্ব্বত-শিখরে আসীন হর-পার্ব্বতীকে দর্শন করিতেছেন। একটি স্তম্ভগাত্রে এই চিত্রটি উৎকীর্ণ আছে এবং সেই স্তম্ভের চারিদিকে চারিটি ফলকে (panel) কিরাতার্জ্জুনীয়ের আখ্যানক সম্পূর্ণরূপে চিত্রিত হইয়াছে। এই স্তম্ভটি এখন কলিকাতার চিত্রশালায় আছে। বুদ্ধ-মূর্ত্তিটি গয়া নগরে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। ভাগলপুরের প্রসিদ্ধ ভূম্যধিকারী স্বৰ্গীয় রায় সূর্য্যনারায়ণ সিংহ বাহাদুরের কনিষ্ঠ পুত্র ইহা বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষদে প্রদান করিয়াছেন। মূর্ত্তির নিম্নে একখানি খোদিতলিপিযুক্ত পিত্তলফলক সংলগ্ন ছিল। এই খোদিতলিপি ‘ভৈক্ষুকী লিপি’ নামক বৌদ্ধ-সঙ্ঘের গোপনীয় লিপিতে উৎকীর্ণ। কেম্ব্রিজের অধ্যাপক মৃত ডাক্তার