প্রত্নতত্ত্ববিদ্গণ অনুমান করেন যে, প্রথম চন্দ্রগুপ্তের পিতা ও পিতামহ সামান্য ভূস্বামী ছিলেন, কারণ গুপ্তবংশীয় সম্রাট্গণের খোদিতলিপিসমূহে শ্রীগুপ্ত বা ঘটোৎকচ গুপ্তের মহারাজাধিরাজ উপাধি দেখিতে পাওয়া যায় না। গুপ্ত বা শ্রীগুপ্তের নামাঙ্কিত কোন মুদ্রা অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই, কিন্তু ঘটোৎকচগুপ্তের নামাঙ্কিত একটি মৃন্ময় মুদ্রা প্রাচীন বৈশালী নগরের ধ্বংসাবশেষ খননকালে আবিষ্কৃত হইয়াছিল[১]। পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে, এই মুদ্রা সমুদ্রগুপ্তের পিতামহ ঘটোৎকচগুপ্তের মুদ্রা নহে; কারণ, ইহাতে রাজপদজ্ঞাপক কোন উপাধি নাই[২]। রুশিয়াদেশে পেট্রোগ্রাড নগরের চিত্রশালায় ঘটোৎকচগুপ্তের নামাঙ্কিত একটি মুদ্রা আছে[৩] কিন্তু পণ্ডিতপ্রবর জন আলান অনুমান করেন যে, এই মুদ্রাটি পরবর্ত্তিকালের ঘটোৎকচ নামধেয় কোন রাজার মুদ্রা[৪]। ইহা সম্ভবতঃ প্রথম কুমারগুপ্তের পুত্র ঘটোৎকচগুপ্তের মুদ্রা।
তৃতীয় চন্দ্রগুপ্ত দ্বাদশাদিত্য, বিষ্ণুগুপ্ত, চন্দ্রাদিত্য ও জয়গুপ্ত প্রকাণ্ডযশের সহিত প্রাচীন গুপ্তরাজবংশের সম্বন্ধ অদ্যাপি নির্ণীত হয় নাই। শতাধিক বর্ষ পূর্ব্বে কালীঘাটে তৃতীয় চন্দ্রগুপ্তের কতকগুলি সুবর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছিল। এতদ্ব্যতীত ভারতবর্ষের অন্য কোন স্থানে অদ্যপি ইহার কোন মুদ্রা বা খোদিতলিপি আবিষ্কৃত হয় নাই। কালীঘাটে এই সময়ে বিষ্ণুগুপ্তেরও কতকগুলি সুবর্ণমুদ্রাও আবিষ্কৃত হইয়াছিল। মুর্শিদাবাদ জেলায় রাঙ্গামাটী গ্রামে বিষ্ণুগুপ্তের আর একটি সুবর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছিল। এই স্থানে জয়গুপ্তের একটি সুবর্ণমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছিল। কুমারগুপ্ত নামধারী দুইজন রাজার মুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছে। প্রথম জয়গুপ্তের একটি মাত্র তাম্রমুদ্রা আবিষ্কৃত হইয়াছিল, ইহা এখন কলিকাতার সরকারী চিত্রশালায় আছে[৫]। মুদ্রার আবিষ্কার-স্থান দেখিয়া অনুমান হয় ষে, তৃতীয় চন্দ্রগুপ্ত, বিষ্ণুগুপ্ত ও দ্বিতীর জয়গুপ্ত মগধ ও গৌড়দেশের অধিপতি ছিলেন। জন আলান অনুমান করেন যে, ইঁহারা স্কন্দগুপ্তের বংশধর কিন্তু স্কন্দগুপ্তের পুত্রপৌত্রাদির অস্তিত্বের কোন প্রমাণই অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। এই কারণে অনুমান হয় যে, ইঁহারা দ্বিতীয় কুমারগুপ্তের বংশজাত।