পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৪
বাঙ্গালার ইতিহাস।

পঞ্চম দশকে ঈশানবর্ম্মা পূর্ব্বদেশ আক্রমণ করিয়াছিলেন এবং তৃতীয় কুমারগুপ্তের সহিত তাঁহার যুদ্ধ হইয়াছিল। কৃষ্ণগুপ্ত বা গোবিন্দগুপ্তের বংশের যে সমস্ত শিলালিপি অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তৎসমুদয় অঙ্গে বা মগধে আবিষ্কৃত হইয়াছে সুতরাং গৌড়দেশ তাঁহাদের অধিকারভুক্ত ছিল কি না তাহা বলিতে পারা যায় না।

 হড়াহা গ্রামে আবিষ্কৃত শিলালিপিতে তৃতীয় কুমারগুপ্তের উল্লেখ নাই কিন্তু সমুদ্রতীরবাসী গৌড়গণের নাম উক্ত শিলালিপিতে যে ভাবে উল্লিখিত হইয়াছে তাহা হইতে বোধ হয় যে, সে সময়ে গৌড়দেশ স্বাধীন হইয়াছিল। উক্ত শিলালিপিতে গৌড়গণকে “সমুদ্রাশ্রয়ান্‌” আখ্যা প্রদান করা হইয়াছে। ইহা হইতে বোধ হয় সূচিত হইতেছে যে, গৌড়গণ নৌ-বলে বলীয়ান ছিলেন। খৃষ্টীয় ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাঙ্গালাদেশে ফরিদপুর জেলায় চারিখানি তাম্রলিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে, নানাকারণে ১৯১০ খৃষ্টাব্দ পর্য্যন্ত ইহাদিগের পাঠোদ্ধার হয় নাই। ১৯১০ খৃষ্টাব্দে শ্রীযুক্ত পার্জিটার (F. E. Pargiter) এই চারিখানি তাম্রলিপির মধ্যে তিনখানির পাঠোদ্ধার[১] করিলেও সেগুলি কৃত্রিম বলিয়া অনুমিত হইয়াছিল[২], কারণ উক্তবর্ষ পর্য্যন্ত যে সমস্ত তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইয়াছে, ফরিদপুরের তাম্রলিপিগুলি তাহা হইতে বিভিন্ন। ১৯১৫ খৃষ্টাব্দে দিনাজপুর জেলার দামোদরপুর গ্রামে আবিষ্কৃত পাঁচ খানি তাম্রলিপির পাঠোদ্ধার হইলে প্রমাণ হইয়াছে যে ফরিদপুরের তাম্রলিপিগুলি কৃত্রিম তাম্রশাসন নহে। দামোদরপুরের তাম্রলিপিগুলির ন্যায় এগুলিও ভূমি বিক্রয়ের দলিল। ফরিদপুরের চারিখানি তাম্রলিপিতে তিনজন নূতন রাজার নাম পাওয়া

  1. Indian Antiquary, Vol. XXXIX, 1910, p. 193 ff.
  2. Journal and Proceedings of the Asiatic Society of Bengal, Vol. VII, pp. 289-308; Vol. X, pp. 425-37.