পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।

হইতেছে বটে কিন্তু বাগরাহাটী গ্রামে আবিষ্কৃত তাম্রলিপিটি কৃত্রিম। ইহা দামোদরপুরে আবিষ্কৃত প্রথম কুমারগুপ্ত, বুধগুপ্ত ও ভানুগুপ্ত এবং ফরিদপুরে আবিষ্কৃত ধর্ম্মাদিত্য ও গোপচন্দ্রের রাজ্যকালের তাম্রলিপির অনুরূপ কিন্তু ইহার লিখনকালে লেখক দুই তিন ভিন্ন ভিন্ন শতাব্দীর অক্ষর ব্যবহার করিয়াছেন। এতদ্দ্বারা প্রমাণ হইতেছে যে, সমাচারদেবের মৃত্যুর অথবা রাজ্যাবসানের পরে কোন ব্যক্তি প্রাচীন তাম্রলিপি ও তাম্রশাসনের অক্ষর অবলম্বন করিয়া এই তাম্রলিপিখানি জাল করিয়াছিল। সমাচারদেব নামক একজন রাজা ছিলেন বটে কিন্তু তিনি ধর্ম্মাদিত্য বা গোপচন্দ্রের পূর্ব্বে কি পরে রাজত্ব করিয়াছিলেন তাহা বলিতে পারা যায় না। ধর্ম্মাদিত্য, গোপচন্দ্র এবং সমাচারদেবের পরে শশাঙ্কের অভ্যুদয় পর্য্যন্ত গৌড়দেশ সম্বন্ধে আর কোন সংবাদ অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই।

 মগধে তৃতীয় কুমারগুপ্তের পরে তাঁহার পুত্র দামোদরগুপ্ত সিংহাসনলাভ করিয়াছিলেন। তিনি যুদ্ধে হূণবিজয়ী মৌখরীগণকে পরাজিত করিয়া তাঁহাদিগের সুশিক্ষিত রণতরীশ্রেণী বিপর্য্যস্ত করিয়াছিলেন[]। প্রাচীন গুপ্তসাম্রাজ্যের অধঃপতনের সময়ে মুখরবংশীয় রাজগণ মধ্যদেশে (যুক্তপ্রদেশে) একটি নূতন রাজ্যস্থাপন করিয়াছিলেন। ইঁহারা অথবা মুখরবংশের অন্য কোনও শাখা মগধদেশের দক্ষিণাংশ বিজয় করিয়াছিলেন। বর্ত্তমান গয়াজেলার বরাবর পর্ব্বতে মৌর্য্যবংশীয় নরপতি অশোক প্রিয়দর্শী ও তাঁহার পুত্র দশরথ কর্ত্তৃক খনিত গুহায়, যজ্ঞবর্ম্মার পৌত্র, শার্দ্দূল বর্ম্মার পুত্র, অনন্তবর্ম্মা কতকগুলি দেবকার্য্যের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। প্রথম শিলালিপি লোমশঋষি-গুহায় উৎকীর্ণ আছে। ইহা হইতে জানিতে পারা যায় যে, অনন্ত-

  1. Fleet’s Corpus Inscriptionum Indicarum, Vol. III, p. 203.