স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। প্রভাকরবর্দ্ধন মালবরাজের কুমারগুপ্ত ও মাধবগুপ্ত নামক পুত্রদ্বয়কে মালব হইতে স্থাণ্বীশ্বরে আনয়ন করিয়া তাঁহাদিগকে রাজ্যবর্দ্ধন ও হর্ষবর্দ্ধনের সঙ্গী নিযুক্ত করিয়াছিলেন[১]। গ্রহবর্ম্মানিহন্তা মালবরাজ দেবগুপ্তের নাম ইতিপূর্ব্বেই উল্লিখিত হইয়াছে। এক বংশসম্ভূত বলিয়াই, বোধ হয়, শশাঙ্ক দেবগুপ্তের সাহায্যার্থ বঙ্গ হইতে সুদূর কান্যকুব্জে যুদ্ধযাত্রা করিয়াছিলেন। প্রভাকরবর্দ্ধন মালবরাজকে যুদ্ধে পরাজিত করিয়াও মালবদেশ অধিকার করেন নাই, কিন্তু মালবরাজপুত্রদ্বয়কে স্থাণ্বীশ্বরে লইয়া গিয়াছিলেন। তাঁহার মৃত্যুর পরে, উপযুক্ত অবসর বিবেচনা করিয়া, দক্ষিণে দেবগুপ্ত ও পূর্ব্বে শশাঙ্ক প্রাচীন গুপ্তরাজবংশের অতীত গৌরব উদ্ধার করিতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছিলেন। এতদ্ব্যতীত গৌড়েশ্বর শশাঙ্ক নরেন্দ্রগুপ্তের, স্থাণ্বীশ্বর রাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রার অপর কোন কারণ দেখিতে পাওয়া যায় না। শশাঙ্ক সসৈন্যে দেবগুপ্তের সহিত মিলিত হইবার পূর্ব্বেই মালবরাজ বোধ হয়, রাজ্যবর্দ্ধনের সহিত যুদ্ধ করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন এবং তৎকর্ত্তৃক পরাজিত হইয়া পলায়ন করিয়াছিলেন, অথবা নিহত হইয়াছিলেন[২]। ইতিপূর্ব্বে দেবগুপ্ত কান্যকুব্জ অধিকার করিয়াছিলেন এবং রাজ্যবর্দ্ধনের ভগিনীপতি গ্রহবর্ম্মাকে পরাজিত ও নিহত করিয়া রাজ্যশ্রীকে কারারুদ্ধ করিয়াছিলেন। রাজ্যশ্রীকে কারারুদ্ধ করিবার বিশেষ কোন কারণ দেখিতে পাওয়া যায় না; কিন্তু বিনা কারণে একজন গুপ্তবংশীয় নরপতি রমণীর প্রতি অত্যাচার করিয়াছিলেন, ইহা বিশ্বাস করিতেও প্রবৃত্তি হয় না। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ অনুমান করেন যে, শশাঙ্কের আদেশানুসারে রাজ্যশ্রী কারামুক্ত হইয়াছিলেন[৩]।
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১২৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।