পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ
১৩৯

কথা আছে, কিন্তু তাহাতে আদিশূর ও জয়ন্তের কোনই প্রমাণ দেখিতে পাওয়া যায় না। অতএব আদিশূর ও জয়ন্ত যে অভিন্ন ব্যক্তি ছিলেন, ইহার কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ আবিষ্কৃত হইয়াছে বলিয়া স্বীকার করা যাইতে পারে না। বসুজ মহাশয় “বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস” রাজন্যকাণ্ডে কর্কোট-বংশের অভ্যুদয়কাল হইতে কাশ্মীরের প্রকৃত ইতিহাস আরম্ভ, এই সম্বন্ধে (ডাক্তার) ভিন্সেণ্ট, এ, স্মিথ (Vincent A. Simth) ও সার অরেল ষ্টাইনের (Sir Aurel Stein) মত উল্লেখ করিয়া জয়াপীড়ের কাহিনীকে ঐতিহাসিক ঘটনারূপে প্রমাণ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন[]। কিন্তু কর্কোট-বংশের অভ্যুদয়কাল হইতে কাশ্মীরের প্রকৃত ইতিহাস আরম্ভ হইয়াছে, ইহা স্বীকার করিলেও সার অরেল ষ্টাইন্ ও ভিন্সেণ্ট স্মিথ যে, জয়াপীড় কাহিনী স্পষ্টাক্ষরে কাল্পনিক বলিয়া স্বীকার করিয়াছেন, তাহা পূর্ব্বে দর্শিত হইয়াছে। খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর পূর্ব্বে গৌড়ে, মগধে বা বঙ্গে শূরবংশীয় রাজগণের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোনই বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু “বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস” রাজন্যকাণ্ডে শূরবংশীয় কতকগুলি রাজার নাম সংগ্রহ করিয়াছেন। তাঁহার মতে ইঁহারা খৃষ্টীয় অষ্টম হইতে একাদশ শতাব্দী পর্য্যন্ত রাজত্ব করিয়াছিলেন। যথাস্থানে এই সকল উক্তির ঐতিহাসিক প্রমাণ আলোচিত হইবে।

 খৃষ্টীয় ষষ্ঠ শতাব্দীতে সমগ্র পঞ্চনদ ও রাজপুতানা গুর্জ্জর নামক পরাক্রান্ত জাতির অধিকারভুক্ত হইয়াছিল। পণ্ডিতগণ অনুমান করেন যে, হূণ জাতির ভারত-আক্রমণের অব্যবহিত পরে গুর্জ্জরগণ মধ্য-এশিয়া হইতে ভারতের উত্তর-পশ্চিমসীমান্তের পার্ব্বত্যপথে আর্য্যাবর্ত্তে প্রবেশ

  1. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, রাজন্যকাণ্ড, পৃঃ ৯৮, পাদটীকা ১৯।