পীড়িত হইয়া অরাজকতা দূর করিবার জন্য রাজনির্ব্বাচন করিয়াছিল। প্রজাবৃন্দ যাঁহাকে গৌড়-বঙ্গ-মগধের সিংহাসন স্বেচ্ছায় প্রদান করিয়াছিল, তাঁহার নাম গোপালদেব। তাঁহার পিতা যুদ্ধ-বিদ্যা-বিশারদ ছিলেন[১], এবং তাঁহার পিতামহ দয়িতবিষ্ণু সর্ব্ববিদ্যাবিৎ ছিলেন[২]। দয়িতবিষ্ণুর পিতৃ-পিতামহের কোন সন্ধান অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। পালরাজবংশের যতগুলি শিলালিপি বা তাম্রশাসন অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হইয়াছে, তন্মধ্যে মাত্র খালিমপুরে আবিষ্কৃত ধর্ম্মপালদেবের তাম্রশাসনে বপ্যট ও দয়িতবিষ্ণুর উল্লেখ দেখিতে পাওয়া যায়। দয়িতবিষ্ণুর বংশপরিচয় অদ্যাবধি কোন তাম্রশাসনে বা শিলালিপিতে আবিষ্কৃত হয় নাই। তাঁহার বংশধরগণ অন্যূন সার্দ্ধ চারি শত বৎসর গৌড়-মগধে রাজত্ব করিয়াছিলেন। তাঁহাদিগের বহু তাম্রশাসন ও শিলালিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে; কিন্তু পাল-রাজবংশের কোন খোদিত-লিপিতেই তাঁহাদিগের বংশ-পরিচয় প্রদত্ত হয় নাই। সন্ধ্যাকরনন্দী-বিরচিত “রামচরিতে” এবং ঘনরামের “ধর্ম্মমঙ্গলে” পালরাজগণের বংশ-পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে। এতদ্ব্যতীত কুমারপালের সেনাপতি কামরূপরাজ বৈদ্যদেবের কমৌলী তাম্রশাসনে পালরাজগণের বংশ-পরিচয় প্রদত্ত হইয়াছে। “রামচরিত” খৃষ্টীয় একাদশ শতাব্দীর শেষ পাদে লিখিত হইয়াছিল এবং বৈদ্যদেবের তাম্রশাসনও ঐ সময়ে অথবা দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে প্রদত্ত হইয়াছিল।
- ↑
আসীদাসাগরাদুর্ব্বীং গুর্ব্বীভিঃ কীর্ত্তিভিঃ কৃতী।
মণ্ডয়ন্ খণ্ডিতারাতিঃ শ্লাঘ্যঃ শ্রীবপ্যটস্ততঃ॥
—ধর্ম্মপালদেবের খালিমপুরের তাম্রশাসন; গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১১-১২। - ↑
শ্রিয়ঃ ইব সুভগায়াঃ সম্ভবো বারিরাশিশ্শশধর ইব ভাসো বিশ্বমাহ্লাদয়ন্ত্যাঃ।
প্রকৃতিরবনিপানাং সন্ততেরুত্তমায়া অজনি দয়িতবিষ্ণুঃ সর্ব্ববিদ্যাবদাতঃ॥
—ধর্ম্মপালদেবের খালিমপুরের তাম্রশাসন; গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১১।