পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/১৮৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ।
১৬৭

উৎপত্তির ইঙ্গিত পাওয়া যাইতেছে। পালরাজ-বংশের তাম্রশাসনসমূহ শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় কর্ত্তৃক বঙ্গভাষায় অনূদিত হইয়াছে; মৈত্রেয় মহাশয়-কৃত পূর্ব্বোক্ত শ্লোকদ্বয়ের অনুবাদে পালবংশের সমুদ্র হইতে উৎপত্তি সম্বন্ধে কোন কথাই নাই। প্রথম শ্লোকাংশটি খালিমপুরে আবিষ্কৃত ধর্ম্মপালদেবের তাম্রশাসনের দ্বিতীয় শ্লোকের অংশ। ইহার বঙ্গানুবাদে দেখিতে পাওয়া যায় যে, চন্দ্র ও লক্ষ্মীর উৎপত্তিস্থান সমুদ্রের সহিত পাল-বংশের বীজি পুরুষ দয়িতবিষ্ণুর তুলনা করা হইয়াছে।[১] দ্বিতীয় শ্লোকাংশটি মুঙ্গেরে আবিষ্কৃত দেবপালদেবের তাম্রশাসনের একাদশ শ্লোক। মৈত্রেয় মহাশয়ের অনুবাদে দেখিতে পাওয়া যায় যে, দেবপালদেবের মাতা রণ্ণা দেবীর সহিত মুক্তাপ্রসবকারী সমুদ্র-জাত সূক্তির তুলনা করা হইয়াছে[২]; সুতরাং এইস্থানে অর্থাৎ গোপাল ও ধর্ম্মপালের ঘটনার পরে পালবংশের উৎপত্তি সম্বন্ধে কোন কথাই থাকিতে পারে না।

 সন্ধ্যাকরনন্দীর রামচরিতে সিন্ধু বা সমুদ্র হইতে ধর্ম্মপালের উৎপত্তির উল্লেখ আছে। রামচরিতের শ্লোকগুলি দ্ব্যর্থবাচক, এইজন্য রামচরিতের যে অংশের টীকা আছে, তাহাতে রামপক্ষে এবং অপর পক্ষে উভয় প্রকারের ব্যাখ্যাই প্রদত্ত হইয়াছে,—

শ্রিয়মুন্মুদ্রিতলক্ষ্মীযুগলং কমলানামিনঃ স বস্তনুতাং।
কৃত্বালোকাহরণং মহাক্ষয়ে যং বিধুর্বিশতি॥
—রাম-চরিত, প্রথম পরিচ্ছেদ, ৩য় শ্লোক।

টীকাকার সমুদ্র পক্ষে ইহার নিম্নলিখিত ব্যাখ্যা করিয়াছেন;—

 “সমুদ্রপক্ষে। কমলানামিনঃ পতিঃ সমুদ্রঃ শ্রিয়ং বঃ তনুতাং ইত এব

  1. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১৮।
  2. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ৪৩।