“অপ্রণীতো হি মাৎস্যন্যায়মুদ্ভাবয়তি বলীয়ানবলং হি গ্রসতে দণ্ডধরাভাবে, তেন গুপ্তঃ প্রভবতীতি[১]।”
“যখন দণ্ড (রাজশক্তি) অপ্রণীত থাকে তখন মাৎস্যন্যায়ের প্রভাব হয়, উপযুক্ত দণ্ডধরের অভাবে প্রবল দুর্ব্বলকে গ্রাস করিয়া থাকে। সেই কারণেই গুপ্তগণের প্রভাবের উৎপত্তি হইয়াছে।” গুপ্ত শব্দের অর্থ লইয়া মতভেদ আছে; কেহ বলেন গুপ্ত অর্থে প্রচ্ছন্ন, কাহারও মতে ইহার অর্থ রক্ষিত অর্থাৎ সহায়-সম্পন্ন, কেহ কেহ বলেন গুপ্ত শব্দে চন্দ্রগুপ্তের নাম করা হইয়াছে। অর্থশাস্ত্রের প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী বলিয়াছেন, “মাৎস্যন্যায়মপোহিতুং” শব্দের অর্থ ‘অন্যরাজ্যভুক্ত হইবার আশঙ্কা দূর করিবার জন্য, অথবা মৎস্যের ন্যায় (অপর মৎস্যের) উদরগ্রস্ত হইবার ভয় দূর করিবার জন্য[২]।” পণ্ডিতপ্রবর শ্রীযুক্ত কাশীপ্রসাদ জয়সওয়াল অনুমান করেন যে, মনুসংহিতার সপ্তম অধ্যায়ে ‘মাৎস্যন্যায়ের’ প্রচ্ছন্ন উল্লেখ আছে[৩]। উদাসীন রঘুনাথ বর্ম্মা-বিরচিত “লৌকিক ন্যায় সংগ্রহ” নামক গ্রন্থে ‘মাৎস্যন্যায়ের পূর্ব্ববৎ ব্যাখ্যাই প্রদত্ত হইয়াছে[৪]। স্বর্গগত অধ্যাপক
- ↑ কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র—১।৪, শ্যামশাস্ত্রীর সংস্করণ, পৃঃ ৯।
- ↑ Memoirs of the Asiatic Society of Bengal. Vol. III, p. 3.
শ্রীযুক্ত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, শাস্ত্রী মহাশয়ের ব্যাখ্যা সম্বন্ধে বিদ্রূপ করিয়া লিখিয়াছেন, ‘মাৎস্যন্যায়ের’ ব্যাখ্যা করিতে গিয়া, “রামচরিতের” ভূমিকায় মহামহোপাধ্যায় পণ্ডিতবর শ্রীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, এম্-এ, লিখিয়াছেন—“to escape from being absorbed into anothor kingdom or to avoid being swallowed up like a fish.”—গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১৯, পাদটীকা।
- ↑
যদি ন প্রণয়েদ্রাজা দণ্ডং দণ্ডেষ্বতন্দ্রিতঃ।
শূলে মৎস্যানিবাপক্ষ্যন্ দুর্ব্বলান্ বলবত্তরাঃ॥
—মনুসংহিতা, সপ্তম অধ্যায়, ২০ শ্লোক।
- ↑ “প্রবল-নির্বল-বিরোধে সবলেন নির্বল-বাধবিবক্ষায়াং তু মাৎস্যন্যায়াবতারঃ।