করিয়াছিলেন”[১]। শ্লোকদ্বয় ও রামচরিতের টীকার উপরে নির্ভর করিয়া গোপালদেবের পূর্ব্বনিবাস সম্বন্ধে তারানাথের উক্তি গ্রহণ করা যাইতে পারে।
গোপালদেব সিংহাসনে আরোহণ করিয়া সর্ব্বপ্রথমে বোধ হয় আত্মরক্ষায় ব্যস্ত ছিলেন। বারংবার বিদেশীয় রাজগণকর্ত্তৃক আক্রান্ত হইয়া গৌড়-মগধ-বঙ্গ নিশ্চয়ই অত্যন্ত হীনবল হইয়া পড়িয়াছিল। কিছুদিন প্রজাবৃন্দকে অরাজকতা ও বিদেশীয় আক্রমণ হইতে রক্ষা করাই বোধ হয় প্রথমে গোপালদেবের রাজ্যকালের প্রধান কর্ত্তব্য হইয়াছিল। গোপালদেবের রাজ্যকালের কোন ঘটনার বিবরণই অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই; এখনও পর্য্যন্ত তাঁহার কোন শিলালিপি, তাম্রশাসন অথবা প্রাচীন মুদ্রা ভারতবর্ষের কোন স্থানেই আবিষ্কৃত হয় নাই। তাঁহার পৌত্র দেবপালদেবের মুঙ্গেরে আবিষ্কৃত তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, “তাঁহার অসংখ্য সেনাদল যুদ্ধার্থ প্রচলিত হইলে, সেনাপদাঘাতোত্থিত ধূলিপটলে পরিব্যাপ্ত হইয়া, গগনমণ্ডল দীর্ঘকালের জন্য বিহঙ্গমগণের বিচরণোপযোগী পদপ্রচারক্ষম অবস্থা প্রাপ্ত হইত বলিয়া প্রতিভাত হইত। তিনি সমুদ্র পর্য্যন্ত ধরণীমণ্ডল জয় করিবার পর, আর যুদ্ধোদ্যমের প্রয়োজন নাই বলিয়া, মদমত্ত রণকুঞ্জরগণকে বন্ধন হইতে মুক্তিদান করিলে, তাহারা স্বাধীনভাবে বনগমন করিয়া
- ↑
তস্যোর্জ্জস্বল-পৌরুষস্য নৃপতেঃ শ্রীরামপালোঽভবৎ পুত্রঃ পালকুলাব্ধি-শীতকিরণঃ সাম্রাজ্য-বিখ্যাতিভাক্।
তেনে যেন জগত্ত্রয়ে জনকভূ-লাভাদ্ যথাবদ্যশঃ ক্ষৌণী-নায়ক-ভীম-রাবণ-বধাদ্যুদ্ধার্ণ্ণবোল্লংঘনাৎ॥
—বৈদ্যদেবের কমৌলী তাম্রশাসন, ৪র্থ শ্লোক—গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১২৯, ১৩৮।