পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

রাজগণ কান্যকুব্জরাজের অভিষেককালে বাধ্য হইয়া সাধুবাদ করিয়াছিলেন অর্থাৎ তাঁহারা ধর্ম্মপালদেব কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়া ইন্দ্ররাজের পরিবর্ত্তে চক্রায়ুধকে কান্যকুব্জের অধিপতি বলিয়া স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। ভোজদেশ ও মৎস্যদেশ বর্ত্তমান রাজপুতানার অংশবিশেষের নাম। কুরু ও যদু বর্ত্তমান পঞ্জাবের প্রাচীন নাম। গন্ধার ও যবন সিন্ধু নদের উভয় পারস্থিত প্রদেশদ্বয়ের নাম। কীর বর্ত্তমান কাঙ্গড়া বা জালামুখী প্রদেশের নাম[] এবং অবন্তি বা উজ্জয়িনী মালবদেশের রাজধানী। সুতরাং চক্রায়ুধকে ইন্দ্রায়ুধের সিংহাসনে স্থাপন করিবার জন্য ধর্ম্মপালদেবকে যে পঞ্চনদ, রাজপুতানা ও মালবের রাজগণকে পরাজিত করিতে হইয়াছিল, সে বিষয়ে কোনই সন্দেহ নাই। খৃষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর পরে উত্তরাপথে গুর্জ্জরগণের যেরূপ বিস্তৃত প্রভাবের নিদর্শন দেখিতে পাওয়া যায়, তাহা হইতে অনুমান হয় যে, ধর্ম্মপাল কর্ত্তৃক পরাজিত কুরু, যদু, যবনাদি দেশের রাজগণ গুর্জ্জর-জাতীয় ছিলেন। এই সময়ে ভিল্লমালের অধিপতিগণ গুর্জ্জররাজচক্রের মণ্ডলেশ্বর ছিলেন এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গুর্জ্জর-রাজ্যের সহিত গৌড়েশ্বরের বিবাদ উপস্থিত হওয়ায় বোধ হয়, তিনি তাঁহার বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। গৌড়েশ্বর ধর্ম্মপাল গুর্জ্জররাজ দ্বিতীয় নাগভট কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়াছিলেন[]। সাগরতালের শিলালিপিতে প্রথমে চক্রায়ুধের ও পরে বঙ্গেশ্বরের পরাজয়ের উল্লেখ আছে।

  1. Baijnath Inscription of Lakshmanachandra of Kiragrama, Epigraphia Indica, Vol. I, p. 104.
  2. দুর্ব্বারবৈরিবরবারণবাজিবারয়াণৌঘসংঘটনঘোরঘনান্ধকারং।
    নির্জ্জিত্য বঙ্গপতিমাবিরভূদ্বিবস্বানুদ্যন্নিব ত্রিজগদেকবিকাশকোষঃ॥১০
    —Annual Report, Archaeological Survey of India, 1903-4, p. 281.