পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ।
১৯৩

অনুমান হয়, চক্রায়ুধ নাগভট কর্ত্তৃক পরাজিত হইলে ধর্ম্মপাল তাঁহার সাহায্যার্থ অগ্রসর হইয়াছিলেন, কিন্তু তিনিও পরাজিত হইয়াছিলেন। ধর্ম্মপাল ও চক্রায়ুধ বোধ হয়, বারবার নাগভট কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়া অবশেষে রাষ্ট্রকূটরাজ তৃতীয় গোবিন্দের সাহায্য ভিক্ষা করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন। নাগভটের পিতা বৎসরাজ যখন পঞ্চনদ হইতে গৌড় পর্য্যন্ত সমস্ত উত্তরাপথ অধিকার করিয়াছিলেন, তখন তৃতীয় গোবিন্দের পিতা ধ্রুব ধারাবর্ষই তাঁহাকে মরুভূমিতে তাড়িত করিয়া উত্তরাপথ-রাজগণের উদ্ধার সাধন করিয়াছিলেন। সেইজন্যই বোধ হয়, ধর্ম্মপাল ও চক্রায়ুধ গুর্জ্জরগণের বিরুদ্ধে ধ্রুবের পুত্র তৃতীয় গোবিন্দের সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছিলেন। দ্বিতীয় নাগভট তৃতীয় গোবিন্দের নিকট পরাজিত হইয়াছিলেন। গোবিন্দ যখন সমস্ত উত্তরাপথ বিজয় করিয়া হিমালয়-পর্ব্বতে উপস্থিত হইয়াছিলেন, তখন কৃতজ্ঞ গৌড়েশ্বর ও কান্যকুব্জরাজ নতশীর্ষে তাঁহার সমীপে আগমন করিয়াছিলেন। ইহার পরে বোধ হয়, কোন কারণে গোবিন্দের সহিত ধর্ম্মপালের বিবাদ হইয়াছিল। কারণ, গোবিন্দের পুত্র প্রথম অমোঘবর্ষের সিরুর ও নীলগুণ্ডের শিললিপিদ্বয় হইতে অবগত হওয়া যায় যে, গোবিন্দ গৌড়গণকে পরাজিত করিয়াছিলেন[]। নাগভট গোবিন্দ কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়া তাঁহার পিতা বৎসরাজের ন্যায় মরুভূমিতে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। গুর্জ্জরগণকে বারবার উত্তরাপথ-আক্রমণে উদ্যত দেখিয়া তৃতীয় গোবিন্দ তাঁহার ভ্রাতুষ্পুত্র কক্ককে গুর্জ্জর-রাজ্যের রুদ্ধ দ্বারের অর্গল-

  1. কেরল-মালব-গৌড়ান্‌ সগুর্জ্জরাংশ্চিত্রকূটগিরিদুর্গস্থান্।
    বদ্ধা কাঞ্চীশানথ স কীর্ত্তিনারায়ণো জাতঃ॥
    —Epigraphia Indica, Vol. VI, pp. 102-3