পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।

গৌরীশঙ্কর হীরাচাঁদ ওঝা কর্ত্তৃক কিয়ৎকাল পূর্ব্বে আবিষ্কৃত হইয়াছে[১]। স্বর্গীয় ডাক্তার কীলহর্ণ অনুমান করেন যে, এই নাগাবলোকই পরবলের পিতা কক্করাজ কর্ত্তৃক পরাজিত হইয়াছিলেন। সুতরাং ইহা অবশ্য-স্বীকার্য্য যে, কক্করাজ খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীর শেষার্দ্ধে জীবিত ছিলেন। কক্করাজের পুত্র পরবল যখন নবম শতাব্দীর তৃতীয় পাদে জীবিত ছিলেন, তখন ইহা স্পষ্ট বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, কক্করাজ ও পরবল দীর্ঘায়ু পুরুষ ছিলেন। সুতরাং ধর্ম্মপালদেবের যৌবনে পরবল-দুহিত রণ্ণাদেবীর সহিত তাঁহার বিবাহ হওয়াই অধিক সম্ভব। পরবল যখন অতিবৃদ্ধ এবং ধর্ম্মপালদেব যখন বহু পূর্ব্বে স্বর্গারোহণ করিয়াছেন, তখনই বোধ হয়, পথারির শিলাস্তম্ভলিপি উৎকীর্ণ হইয়াছিল। পরবল-দুহিতা রণ্ণাদেবীর সহিত ধর্ম্মপালদেবের বিবাহ-সম্বন্ধে শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু এক অদ্ভুত মত প্রকাশ করিয়াছেন। তিনি বলেন যে, “রাষ্ট্রকূট-সম্রাট্ ৩য় গোবিন্দ অনুজ ইন্দ্ররাজকে লাটের আধিপত্য প্রদান করেন। কক্করাজ সেই ইন্দ্ররাজের পুত্র, সুতরাং রণ্ণাদেবী হইতেছেন রাষ্ট্রকূট-সম্রাট্ ৩য় গোবিন্দের ভ্রাতুষ্পুত্রের পৌত্রী, অর্থাৎ—রাষ্ট্রকূট-সম্রাটের ৪র্থ পুরুষ অধস্তন। এদিকে ধর্ম্মপাল ৩য় গোবিন্দের সমসাময়িক। এরূপ স্থলে তাঁহার সহিত কক্করাজের পৌত্রীর বিবাহ কখনই সম্ভবপর নহে। ডাক্তার ফ্লিট্ পরবল ৩য় গোবিন্দেরই একটি নামান্তর পাইয়াছেন। তাঁহার মতে এই তৃতীয় গোবিন্দই রণ্ণাদেবীর পিতা, সুতরাং ধর্ম্মপালের শ্বশুর[২]।” এই মতই সমীচীন। তৃতীয় গোবিন্দ তাঁহার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ইন্দ্ররাজকে লাটের আধিপত্য প্রদান করিয়াছিলেন

  1. Epigraphia Indica, Vol. IX, p. 241.
  2. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস, রাজন্যকাণ্ড, পৃঃ ১৫৫, পাদটীকা, ৩১।