গমনের কথা আছে। বাদালের স্তম্ভলিপিতে দেবপাল কর্ত্তৃক গুর্জ্জরনাথ ও দ্রবিড়েশ্বরের দর্পচূর্ণের উল্লেখ আছে। বিন্ধ্যপর্ব্বত গুর্জ্জর-রাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব্ব সীমায় ও দ্রবিড় বা রাষ্ট্রকূট-রাজ্যের উত্তর-পূর্ব্ব সীমায় অবস্থিত, সুতরাং সম্ভবতঃ বিন্ধ্যপর্ব্বতেরই কোন উপত্যকায় দ্রবিড়নাথ ও গুর্জ্জরেশ্বর পরাজিত হইয়াছিলেন বলিয়া বোধ হয়। রাষ্ট্রকূটরাজ তৃতীয় গোবিন্দের পুত্র শর্ব্ব বা প্রথম অমোঘবর্ষ ষষ্টি বর্ষের অধিককাল মান্যখেতের সিংহাসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন, সুতরাং ইহাই সম্ভব যে, তিনি দেবপালদেবের সমসাময়িক এবং তৎকর্ত্তৃক পরাজিত হইয়াছিলেন। অমোঘবর্ষের দুইখানি শিলালিপিতে তাঁহার সহিত গৌড়েশ্বরের যুদ্ধের উল্লেখ আছে। সিরুর ও নীলগুণ্ডে আবিষ্কৃত শিলালিপিদ্বয় হইতে অবগত হওয়া যায় যে, অঙ্গ, বঙ্গ, মগধ, মালব ও বেঙ্গীর অধিপতিগণ প্রথম অমোঘবর্ষের অর্চ্চনা করিয়াছিলেন[১]। অঙ্গ, বঙ্গ ও মগধ তখন স্বতন্ত্র রাজ্য ছিল না এবং বঙ্গে স্বতন্ত্র রাজ্য থাকিলেও অঙ্গ ও মগধ পালরাজবংশের অধিকারকালে কখনই স্বাতন্ত্র্য লাভ করে নাই; সুতরাং “বঙ্গাঙ্গমগধ” পদদ্বারা গৌড়রাজ্যই বুঝাইতেছে।
এই সমস্ত খোদিতলিপি হইতে দেবপালদেবের রাজ্যকালের নিম্নলিখিত ইতিহাস অবগত হওয়া যায়। দেবপালদেব যুদ্ধাভিযানের সময়ে বিন্ধ্যপর্ব্বতে গমন করিয়াছিলেন। সম্ভবতঃ এইস্থানে তাঁহার সহিত দক্ষিণাপথেশ্বর প্রথম অমোঘবর্ষের যুদ্ধ হইয়াছিল, এই যুদ্ধে উভয় পক্ষই জয় ঘোষণা
- ↑
অরিনৃপতিমকুটঘট্টিতচরণস্ সকলভুবনবন্দিতশৌর্য্যঃ।
বঙ্গাঙ্গমগধ-মালব-বেঙ্গীশৈরর্চ্চিতোঽতিশয়ধবলঃ॥
—নীলগুণ্ড ও সিরুরের শিলালিপি; Epigraphia Indica, Vol. VI, p. 103; Indian Antiquary, Vol. XII, p. 218.