খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে হিমালয় পর্ব্বতবাসী কাম্বোজ জাতি উত্তর-বঙ্গ আক্রমণ করিয়াছিল এবং উত্তরবঙ্গের বর্ত্তমান অধিবাসী কোচ, মেচ ও পলিয়া জাতি সেই কাম্বোজগণের বংশধর[১]। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু কাম্বোজজাতীয় গৌড়রাজগণের উৎপত্তি সম্বন্ধে আলোচনাকালে বলিয়াছেন যে, কাম্বোজজাতীয় রাজবংশ বোম্বাই প্রদেশের কম্বায় বা খম্বায়ৎ নগরের অধিবাসী[২]! কাম্বোজবংশীয় গৌড়-রাজগণ যে বিদেশীয় ছিলেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। দ্বিতীয় বিগ্রহপাল গৌড়দেশ হারাইয়া বোধ হয় রাঢ়ে অথবা বঙ্গদেশে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার ২৬শ রাজ্যাঙ্কে লিখিত একখানি ‘পঞ্চরক্ষা’ গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে[৩], এতদ্ব্যতীত দ্বিতীয় বিগ্রহপালের রাজ্যকালের কোন নিদর্শনই অদ্যাবধি আবিষ্কার হয় নাই। গুর্জ্জর-রাজ মহীপাল বোধ হয় এই সময়ে চন্দেল্লবংশীয় যশোবর্ম্মদেবের সাহায্যে মগধ ও অঙ্গ পুনরধিকার করিয়াছিলেন।
ধর্ম্মপাল ও দেবপালদেবের রাজ্যকালে গৌড়-মগধ-বঙ্গে শিল্পের চরম উৎকর্ষ সাধিত হইয়াছিল। মগধ ও গৌড় প্রস্তর-শিল্পের জন্য সমগ্র ভারতবর্ষে বিখ্যাত হইয়া উঠিয়াছিল। হিন্দু ও বৌদ্ধ, বহুবিধ ধাতু ও প্রস্তরনির্ম্মিত মূর্ত্তি এই সময়ে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। নারায়ণপালের পরে পালরাজবংশের অবনতির সহিত গৌড়ীয় শিল্পেরও অবনতি
- ↑ গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৩৭।
- ↑ বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (রাজন্যকাণ্ড), পৃঃ ১৭২।
- ↑ পরমেশ্বরপরমভট্টারকপরমসৌগত মহারাজাধিরাজ শ্রীমদ্বিগ্রহপালদেবস্য প্রবর্দ্ধমান বিজয়রাজ্যে ......... সম্বৎ ২৬ আষাঢ় দিনে ২৪।
—Bendall, Catalogue of the Sanskrit Manuscripts in the British Museum, p. 232; Journal of the Royal Asiatic Society, 1910, p. 151.