পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীর মধ্যভাগে হিমালয় পর্ব্বতবাসী কাম্বোজ জাতি উত্তর-বঙ্গ আক্রমণ করিয়াছিল এবং উত্তরবঙ্গের বর্ত্তমান অধিবাসী কোচ, মেচ ও পলিয়া জাতি সেই কাম্বোজগণের বংশধর[১]। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু কাম্বোজজাতীয় গৌড়রাজগণের উৎপত্তি সম্বন্ধে আলোচনাকালে বলিয়াছেন যে, কাম্বোজজাতীয় রাজবংশ বোম্বাই প্রদেশের কম্বায় বা খম্বায়ৎ নগরের অধিবাসী[২]! কাম্বোজবংশীয় গৌড়-রাজগণ যে বিদেশীয় ছিলেন, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নাই। দ্বিতীয় বিগ্রহপাল গৌড়দেশ হারাইয়া বোধ হয় রাঢ়ে অথবা বঙ্গদেশে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার ২৬শ রাজ্যাঙ্কে লিখিত একখানি ‘পঞ্চরক্ষা’ গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছে[৩], এতদ্ব্যতীত দ্বিতীয় বিগ্রহপালের রাজ্যকালের কোন নিদর্শনই অদ্যাবধি আবিষ্কার হয় নাই। গুর্জ্জর-রাজ মহীপাল বোধ হয় এই সময়ে চন্দেল্লবংশীয় যশোবর্ম্মদেবের সাহায্যে মগধ ও অঙ্গ পুনরধিকার করিয়াছিলেন।

 ধর্ম্মপাল ও দেবপালদেবের রাজ্যকালে গৌড়-মগধ-বঙ্গে শিল্পের চরম উৎকর্ষ সাধিত হইয়াছিল। মগধ ও গৌড় প্রস্তর-শিল্পের জন্য সমগ্র ভারতবর্ষে বিখ্যাত হইয়া উঠিয়াছিল। হিন্দু ও বৌদ্ধ, বহুবিধ ধাতু ও প্রস্তরনির্ম্মিত মূর্ত্তি এই সময়ে প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল। নারায়ণপালের পরে পালরাজবংশের অবনতির সহিত গৌড়ীয় শিল্পেরও অবনতি

  1. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৩৭।
  2. বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (রাজন্যকাণ্ড), পৃঃ ১৭২।
  3. পরমেশ্বরপরমভট্টারকপরমসৌগত মহারাজাধিরাজ শ্রীমদ্বিগ্রহপালদেবস্য প্রবর্দ্ধমান বিজয়রাজ্যে ......... সম্বৎ ২৬ আষাঢ় দিনে ২৪।
     —Bendall, Catalogue of the Sanskrit Manuscripts in the British Museum, p. 232; Journal of the Royal Asiatic Society, 1910, p. 151.