পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নবম পরিচ্ছেদ।
২৫৫

৯৯৯ খৃষ্টাব্দে পরলোক গমন করিলে তাঁহার পুত্র মহ্‌মূদ্ বারম্বার আক্রমণ করিয়া প্রাচীন ষাহি-রাজ্য ধ্বংস করিয়াছিলেন। মহ্‌মূদের গতিরোধ করিবার জন্য কাশ্মীর, কান্যকুব্জ ও কলঞ্জরের অধিপতিগণ প্রাণপণে জয়পালকে সাহায্য করিয়াছিলেন। জয়পাল, তৎপুত্র অনঙ্গপাল ও তৎপুত্র ত্রিলোচনপাল আর্য্যাবর্ত্ত রক্ষার জন্য প্রাণবিসর্জ্জন করিলে ষাহিরাজ্য মহ্‌মূদের অধীন হইয়াছিল। শেষ মুহূর্ত্তে আর্য্যাবর্ত্ত-রাজগণের চৈতন্য হইলে প্রতীহার, চন্দেল্ল ও লোহরবংশীয় রাজগণ, যখন ষাহিগণকে যথাসাধ্য সাহায্য করিয়াছিলেন, তখনও গৌড়েশ্বর আর্য্যাবর্ত্ত রক্ষার জন্য স্বদেশীয় রাজবৃন্দের সহিত এই মহাযুদ্ধে যোগদান করেন নাই। মুসলমান ঐতিহাসিকগণ যুদ্ধার্থে সমবেত আর্য্যাবর্ত্ত-রাজগণের মধ্যে গৌড়েশ্বরের নাম করেন নাই, সুতরাং ইহা স্থির যে, গৌড়েশ্বর ষাহি-রাজগণের সাহায্যার্থ অগ্রসর হন নাই। মগধে গোবিন্দপাল ও বঙ্গে লক্ষণসেনের পুত্ত্রগণ দ্বিশতবর্ষ পরে মহীপালের কৃতপাপের প্রায়শ্চিত্ত করিয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ অনুমান করেন, “কলিঙ্গ জয়ের পর, মৌর্য্য অশোকের ন্যায়, কাম্বোজান্বয়জ গৌড়পতির কবল হইতে বরেন্দ্র উদ্ধার করিয়া, মহীপালেরও বৈরাগ্য উপস্থিত হইয়াছিল এবং অশোকের ন্যায় মহীপালও যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিত্যাগ করিয়া, পরহিতকর এবং পারত্রিক কল্যাণকর কর্ম্মানুষ্ঠানে জীবন উৎসর্গ করিতে কৃতসঙ্কল্প হইয়াছিলেন[১]।” চন্দ মহাশয়ের উক্তি সম্বন্ধে শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু বলিয়াছেন, “বাস্তবিক তখন মহীপালের বৈরাগ্যের উপযুক্ত কাল উপস্থিত হয় নাই।..... যে কলঞ্জরপতি তাঁহার পিতামাতাকে বন্দী করিয়া লইয়া গিয়াছিলেন, তাঁহার সহিত মিত্রতা ও একতা স্থাপন করিয়া

  1. গৌড়রাজমালা, পৃঃ ৪১।