বর্ষে গদাধরের জন্য আর একটি মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। বর্ত্তমান গদাধর-মন্দিরের প্রাঙ্গণে অবস্থিত নরসিংহদেবের মন্দিরমধ্যে আবিষ্কৃত শিলালিপি হইতে এই কথা অবগত হওয়া যায়[১]। নয়পালদেবের চতুর্দ্দশ রাজ্যাঙ্কে রাজ্ঞী উদ্দাকার ব্যয়ে লিখিত একখানি “পঞ্চরক্ষা” গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছিল। ইহা এক্ষণে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুস্তকাগারে রক্ষিত আছে। ইহার পুষ্পিকায় লিখিত আছে;—“দেয়ধর্ম্মোয়ং প্রবরমহাযানযায়িন্যা পরমোপাসিকারাজ্ঞীউদ্দাকায়া যদত্রপুণ্যন্তদ্ভবত্বাচার্য্যোপাধ্যায়মাতাপিতৃপূর্ব্বংগমং কৃত্বা সকল সত্ত্বরাশেরনুত্তরজ্ঞানাবাপ্তয় ইতি॥ পরমসৌগতমহারাজাধিরাজপরমেশ্বরশ্রীমন্নয়পালদেব-প্রবর্দ্ধমানবিজয়রাজ্যে সম্বৎ ১৪ চৈত্রদিনে ২৭ লিখিতেয়ং ভট্টারিকা ইতি[২]।” অনুমান হয় যে, নয়পালদেব বিংশতিবর্ষকাল গৌড়-সিংহাসনে আসীন ছিলেন এবং ১০৪৫ খৃষ্টাব্দে তাঁহার মৃত্যু হইয়াছিল। নয়পালদেবের রাজ্যকালে বৈদ্যজাতির প্রভূত উন্নতি হইয়াছিল; বৈদ্য-গ্রন্থকার চক্রপাণিদত্তের পিতা নারায়ণ, নয়পালদেবের রন্ধনশালার অধ্যক্ষ ছিলেন[৩]। জনার্দ্দন-মন্দিরের প্রশস্তি বাজীবৈদ্যসহদেব[৪] কর্ত্তৃক এবং গদাধর-মন্দিরের প্রশস্তি বৈদ্যবজ্রপাণি[৫] কর্ত্তৃক রচিত হইয়াছিল। এই খোদিতলিপিদ্বয়ে শিল্পীর অনবধানতাপ্রযুক্ত বহু ভ্রম সত্বেও রচয়িতৃগণের বিদ্যার ও রচনাকৌশলের যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। নয়পালদেবের মৃত্যুর পরে তাঁহার পুত্র তৃতীয় বিগ্রহপাল গৌড়-মগধ-বঙ্গের
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৮২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬২
বাঙ্গালার ইতিহাস।