পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৮২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬২
বাঙ্গালার ইতিহাস।

বর্ষে গদাধরের জন্য আর একটি মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন। বর্ত্তমান গদাধর-মন্দিরের প্রাঙ্গণে অবস্থিত নরসিংহদেবের মন্দিরমধ্যে আবিষ্কৃত শিলালিপি হইতে এই কথা অবগত হওয়া যায়[১]। নয়পালদেবের চতুর্দ্দশ রাজ্যাঙ্কে রাজ্ঞী উদ্দাকার ব্যয়ে লিখিত একখানি “পঞ্চরক্ষা” গ্রন্থ আবিষ্কৃত হইয়াছিল। ইহা এক্ষণে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পুস্তকাগারে রক্ষিত আছে। ইহার পুষ্পিকায় লিখিত আছে;—“দেয়ধর্ম্মোয়ং প্রবরমহাযানযায়িন্যা পরমোপাসিকারাজ্ঞীউদ্দাকায়া যদত্রপুণ্যন্তদ্ভবত্বাচার্য্যোপাধ্যায়মাতাপিতৃপূর্ব্বংগমং কৃত্বা সকল সত্ত্বরাশেরনুত্তরজ্ঞানাবাপ্তয় ইতি॥ পরমসৌগতমহারাজাধিরাজপরমেশ্বরশ্রীমন্নয়পালদেব-প্রবর্দ্ধমানবিজয়রাজ্যে সম্বৎ ১৪ চৈত্রদিনে ২৭ লিখিতেয়ং ভট্টারিকা ইতি[২]।” অনুমান হয় যে, নয়পালদেব বিংশতিবর্ষকাল গৌড়-সিংহাসনে আসীন ছিলেন এবং ১০৪৫ খৃষ্টাব্দে তাঁহার মৃত্যু হইয়াছিল। নয়পালদেবের রাজ্যকালে বৈদ্যজাতির প্রভূত উন্নতি হইয়াছিল; বৈদ্য-গ্রন্থকার চক্রপাণিদত্তের পিতা নারায়ণ, নয়পালদেবের রন্ধনশালার অধ্যক্ষ ছিলেন[৩]। জনার্দ্দন-মন্দিরের প্রশস্তি বাজীবৈদ্যসহদেব[৪] কর্ত্তৃক এবং গদাধর-মন্দিরের প্রশস্তি বৈদ্যবজ্রপাণি[৫] কর্ত্তৃক রচিত হইয়াছিল। এই খোদিতলিপিদ্বয়ে শিল্পীর অনবধানতাপ্রযুক্ত বহু ভ্রম সত্বেও রচয়িতৃগণের বিদ্যার ও রচনাকৌশলের যথেষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। নয়পালদেবের মৃত্যুর পরে তাঁহার পুত্র তৃতীয় বিগ্রহপাল গৌড়-মগধ-বঙ্গের

  1. Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol. V, p. 78.
  2. Bendall’s Catalogue of Buddhist Sanskrit Manuscripts in the University Library, Cambridge, p, 175, No. Add. 1688.
  3. চক্রদত্ত, ১৩০২ সাল, পৃঃ ৪০৭।
  4. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১২০।
  5. Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol. V, p. 78.