আছে। কর্ণের কন্যা যৌবনশ্রী ব্যতীত তৃতীয় বিগ্রহপাল এক রাষ্ট্রকূট-বংশীয়া মহিলার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন, ইঁহার নাম অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। বিগ্রহপালদেবের তিন পুত্রের নাম আবিষ্কৃত হইআছে;—মহীপাল, শূরপাল ও রামপাল। রামপাল রাষ্ট্রকূটবংশীয়া মহিষীর গর্ভজাত। ইঁহারা সকলেই একে একে গৌড়-সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। বিগ্রহপালদেবের মৃত্যুর পরে তাঁহার জ্যেষ্ঠ পুত্র দ্বিতীয় মহীপালদেব গৌড়-সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন।
বীরভূম জেলায় পাইকোর গ্রামে শ্রীযুক্ত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় মহাশয় চেদী-রাজ শ্রীকর্ণদেবের শিলালিপিযুক্ত একটি পাষাণস্তম্ভ আবিষ্কার করিয়াছেন। এই খোদিতলিপিতে শ্রীকর্ণদেবের নাম ও তাঁহার বংশপরিচয় স্পষ্ট পাঠ করা যায় কিন্তু খোদিতলিপি ক্ষয় হইয়া যাওয়ায় উক্ত স্তম্ভ কি জন্য প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল তাহা বুঝিতে পারা যায় না। বঙ্গদেশের কেন্দ্রস্থলে রাঢ় ভূভাগের মধ্যদেশে অবস্থিত পাইকোর গ্রামে এই স্তম্ভ আবিষ্কৃত হওয়ায় অনুমান হইতেছে যে, কর্ণদেব স্বয়ং এই পাইকোর গ্রামে আসিয়া একটি মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন, অথবা একটি জয়স্তম্ভ স্থাপন করাইয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় যে স্তম্ভটি আবিষ্কার করিয়াছেন তাহা হয় কর্ণদেবের জয়স্তম্ভ, না হয় কর্ণদেব নির্ম্মিত মন্দিরের মণ্ডপ বা অর্দ্ধমণ্ডপের স্তম্ভ[১]। কর্ণদেব নির্ম্মিত মন্দির রেবারাজ্যে অমর-কণ্টকনামক তীর্থে আবিষ্কৃত হইয়াছে। পাইকোরের ধ্বংসাবশেষ খনন করিলে নূতন তথ্য আবিষ্কার হইতে পারে। কর্ণদেব
- ↑ পাইকোরের স্তস্তলিপির বিবরণ শ্রীযুক্ত হরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় কর্ত্তৃক “বীরভূম বিবরণ” নামক গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডে প্রকাশিত হইয়াছে (পৃঃ ৯)। প্রত্নতত্ত্ববিভাগের পূর্ব্বচক্রের অধ্যক্ষ শ্রীযুক্ত কাশীনাথ নারায়ণ দীক্ষিত আমাকে এই খোদিত লিপির প্রতিলিপি, উদ্ধৃত পাঠ ও স্তম্ভের চিত্র প্রদান করিয়া বাধিত করিয়াছেন।