পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/২৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।

করিতে হইলে অপর প্রমাণের সমর্থন আবশ্যক। অদ্যাবধি কোন তাম্রশাসনে বা খোদিতলিপিতে কুলশাস্ত্রের উক্তি সমর্থনকারী প্রমাণ আবিষ্কৃত হয় নাই। কুলশাস্ত্রের ঐতিহাসিক প্রমাণের মূল্য পূর্ব্বে আলোচিত হইয়াছে (পৃঃ ৫২)। আদিশূর সম্বন্ধে কুলশাস্ত্রের প্রমাণ ব্যতীত যখন অন্য কোন জাতীয় প্রমাণ আবিষ্কৃত হয় নাই, তখন আদিশূর সম্বন্ধীয় কুলগ্রন্থের প্রমাণ বিশ্লেষণ করা নিতান্ত আবশ্যক। আদিশূর সম্বন্ধে ১৩১৯ বঙ্গাব্দ পর্য্যন্ত কুলশাস্ত্রের যত প্রমাণ আবিষ্কৃত হইয়াছিল, তাহা শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ কর্ত্তৃক “গৌড়রাজমালা”য় সঙ্কলিত হইয়াছে।

 শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ বলিয়াছেন,—“রাটীয় কুলজ্ঞগণের মধ্যে প্রচলিত আদিশূর সম্বন্ধীয় জনশ্রুতি নিম্নোক্ত শ্লোকটিতে বিনিবদ্ধ আছে,—

আসীৎ পুরা মহারাজ আদিশূর প্রতাপবান্।
আনীতবান্ দ্বিজান্ পঞ্চ পঞ্চগোত্রসমুদ্ভবান্॥

 ...বারেন্দ্র কুলজ্ঞগণের গ্রন্থে আরও কিছু বিবরণ পাওয়া যায়। তাঁহারা আদিশূরের এবং বল্লালসেনের সম্বন্ধ নিরূপণ করিয়াছেন। যথা,—

 “জাতো বল্লালসেনো গুণিগণগণিতস্তস্য দৌহিত্রবংশে।”—আদিশূর রাজা পঞ্চগোত্রের পঞ্চ ব্রাহ্মণ আনয়ন করিলেন......এহি পঞ্চগোত্রে পঞ্চ ব্রাহ্মণ সংস্থাপন করিয়া আদিশূর রাজার সর্গারোহণ।...বারেন্দ্রকুলপঞ্জিকার ঐতিহাসিক অংশ ‘আদিশূর রাজার ব্যাখ্যা’ নামে পরিচিত। লালোরনিবাসী শ্রীযুক্ত মনোমোহন মুকুটমণির, মাঝগ্রামের শ্রীযুক্ত জানকীনাথ সার্ব্বভৌমের এবং রামপুর বোয়ালিয়ার শ্রীযুক্ত নৃত্যগোপাল রায় মহাশয়-সংগৃহীত পুঠিয়ানিবাসী ৺মহেশচন্দ্র শিরোমণির ঘরের পুস্তকমধ্যে পাঁচ প্রকার আদিশূর রাজার ব্যাখ্যার পরিচয় প্রাপ্ত হওয়া যায়। তন্মধ্যে দুইখানিতে বল্লালসেন আদিশূরের দৌহিত্রবংশোদ্ভব বলিয়া কথিত।......“গৌড়ে ব্রাহ্মণ” গ্রন্থে (দ্বিতীয় সংস্করণ, ১৬ পৃঃ) উদ্ধৃত একটি শ্লোকে কথিত হইয়াছে—রাজা শ্রীধর্ম্মপাল ভট্টনারায়ণের পুত্র আদিগাঞিকে যজ্ঞান্তে দক্ষিণা দানার্থ ধামসার গ্রাম দান করিয়াছিলেন। শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসুর মতানুসারে, এই ধর্ম্মপালকে যদি পালবংশীয় ধর্ম্মপাল মনে করা যায়, তবে আদিশূরকে ধর্ম্মপালের পিতা গোপালের তুল্যকালীন বিবেচনা করিতে হয়। এইরূপ সিদ্ধান্ত ‘গৌড়ে ব্রাহ্মণে’ধৃত (৮৩ পৃঃ) ‘ভাদুড়ীকুলের বংশাবলীর নিম্নোক্ত বচনের বিরোধী=