ও কোল্লগিরেয় (১৪।৮৩।১১) নামে উল্লিখিত হইয়াছে। ‘... এরূপ স্থলে কোল্লগিরেয় বা হরিবংশবর্ণিত কোল জনপদ সুরাষ্ট্রের দক্ষিণে হইতেছে।”
বসুজ মহাশয় যখন স্পষ্ট স্বীকার করিয়া লইয়াছেন যে, কোলাঞ্চ কান্যকুব্জ নহে, তখন কান্যকুব্জ হইতে ব্রাহ্মণ আগমন কিরূপে স্বীকার করা যাইতে পারে? অথচ অধিকাংশ কুলগ্রন্থে দেখিতে পাওয়া যায় যে, আদিশূর কান্যকুব্জ হইতেই ব্রাহ্মণ আনয়ন করিয়াছিলেন। পরস্পরের বিরোধী উক্তিসমূহের উপরে নির্ভর করিয়া আদিশূরের কাল নির্ণয় করা অসম্ভব এবং সেই জন্যই গ্রন্থমধ্যে আদিশূরের নাম ও বিবরণ নিবিষ্ট হইল না। কেহই আদিশূরের অস্তিত্ব অস্বীকার করেন না। শ্রীযুক্ত রমাপ্রসাদ চন্দ এই মত সমর্থন করিয়াছেন (মানসী, মাঘ, ১৩২১)। আদিশূর নামক কোন রাজার রাজ্যকালে বঙ্গে ব্রাহ্মণ আগমন ঘটিয়াছিল, এই প্রবাদের উপরে নির্ভর করিয়া কুলাচার্য্যগণ গ্রন্থ রচনা করিয়াছিলেন। এই প্রবাদের মূলে সত্য নিহিত আছে বলিয়াই বোধ হয়; কারণ, শ্যামলবর্ম্মার প্রসঙ্গে দৃষ্ট হইয়াছে যে, কুলশাস্ত্রের ভিত্তি সুদৃঢ় সত্যের উপরে স্থাপিত। ভোজবর্ম্মার তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইয়া প্রমাণ হইয়াছে যে, শ্যামলবর্ম্মা বিজয়সেনের পুত্র নহেন বটে, কিন্তু শ্যামলবর্ম্মা নামে বঙ্গদেশে একজন প্রকৃত রাজা ছিলেন। ‘বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস,’ রাজন্যকাণ্ডের চতুর্থ অধ্যায়ে শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু যে সমস্ত ঐতিহাসিক ঘটনা বা রাজগণের নাম উল্লেখ করিয়াছেন, উপযুক্ত প্রমাণ দ্বারা সমর্থিত না হওয়ায় তৎসমুদয় গ্রন্থমধ্যে গৃহীত হইল না।
যুক্ত প্রদেশের এলাহাবাদ জেলায় গোহারবা গ্রামে আবিষ্কৃত, কর্ণদেবের সপ্তম রাজ্যাঙ্কে সম্পাদিত তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, কর্ণদেবের পিতা গাঙ্গেয়দেব, কীর, অঙ্গ, কুন্তল ও উৎকল-রাজকে পরাজিত করিয়াছিলেন।
কারাপংজরবদ্ধকীরনৃপতির্দীপ্তোঙ্গলক্ষ্মীচয়ৈঃ
স্তস্মাৎকুন্তলভঙ্গভঙ্গিরসিকোগাঙ্গেয়দেবোভবৎ।
যেনাকারি করীন্দ্রকুম্ভদলনব্যাপারসারাত্মনা
নির্জ্জিত্যোৎকলমবধিসীম্নি জয়স্তম্ভঃ স্বকীয়োভুজঃ॥ ১৭
—Epigraphia Indica, Vol. XI, p. 143.