“রাজগণের মাতুল” উপাধিতে ভূষিত হইয়াছেন, ইহা হইতে অনুমান হয় যে, সম্ভবতঃ দ্বিতীয় মহীপাল এবং দ্বিতীয় শূরপালও মথনদেবের ভাগিনেয় ছিলেন। সারনাথের শিলালিপিতে মথন কর্ত্তৃক দেবরক্ষিতের পরাজয়ের উল্লেখ দেখিয়া অনুমান হয় যে, সম্ভবতঃ কৈবর্ত্ত-বিদ্রোহকালে অথবা তাহার পূর্ব্বে পীঠীপতি রামপালের বিরুদ্ধাচরণ করিয়াছিলেন। মথনদেব দেবরক্ষিতকে পরাজিত করিয়া তাঁহাকে স্বপক্ষে আনয়ন করিবার জন্য স্বীয় কন্যা শঙ্করদেবীর সহিত দেবরক্ষিতের বিবাহ দিয়াছিলেন। রামপালের বারেন্দ্র অভিযানের পূর্ব্বে মথন কর্ত্তৃক দেবরক্ষিত পরাজিত হইয়াছিলেন; কারণ, বারেন্দ্র অভিযানকালে ভীমযশঃ মগধ ও পীঠীর অধিপতি ছিলেন এবং মথনের পরিচয়-প্রসঙ্গে দেবরক্ষিতের পরাজয় উল্লিখিত হইয়াছে। পীঠী বর্ত্তমান পিট্টপুরমের প্রাচীন নাম হওয়া অসম্ভব; কারণ, তৃতীয় বিগ্রহপাল অথবা নয়পালের পরে পালরাজবংশের কোন রাজার দাক্ষিণাত্যে যুদ্ধ যাত্রা করিবার অথবা দাক্ষিণাত্যের কোন স্থানে অধিকার রক্ষা করিবার ক্ষমতা ছিল না। পীঠী দক্ষিণ মগধের অংশের, অর্থাৎ বর্ত্তমান গয়া জেলার প্রাচীন নাম। দেশাবলী নামক গ্রন্থে পীঠঘট্টা নামক একটি স্থানের উল্লেখ আছে[১]। ঘট্টা শব্দদ্বারা এই স্থান গঙ্গা বা অপর কোন নদীর উপরে অবস্থিত ছিল, ইহাই সূচিত হইতেছে। কতকগুলি প্রাচীন মুদ্রায় ‘পঠ’ উৎকীর্ণ আছে দেখিতে পাওয়া যায়[২]। ইহা প্রাচীন পীঠীর মুদ্রা হইলেও হইতে পারে। কিন্তু এই সকল মুদ্রার প্রাপ্তিস্থান নির্ণয় করিবার কোনই উপায় নাই এবং অদ্যাপি ইহাদিগের মুদ্রণকাল নির্ণীত হয় নাই। সামন্তচক্রের
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩০৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৮৬
বাঙ্গালার ইতিহাস।