কেশরিবংশের আর একজন মাত্র রাজার নাম আবিষ্কৃত হইয়াছে। ইঁহার নাম উদ্যোতকেশরী[১]। জয়সিংহের পর দেবগ্রামপ্রতিবদ্ধ বালবলভীর অধীশ্বর বিক্রমরাজ্যের নাম উল্লিখিত হইয়াছে। বালবলভীর অবস্থান অদ্যাবধি অজ্ঞাত রহিয়াছে। মহামহোপাধ্যায় শ্রীযুক্ত হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতানুসারে ‘বালবলভী’ বর্ত্তমান ‘বাগড়ী’র প্রাচীন নাম[২]। কিন্তু এই উক্তির সমর্থক কোন প্রমাণ অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। ‘রামচরিতে’ বালবলভীর বিবরণ দেখিয়া বোধ হয় যে, উক্ত দেশ নদীবহুল ছিল[৩]। উড়িষ্যায় ভুবনেশ্বরে আবিষ্কৃত হরিবর্ম্মদেবের মন্ত্রী ভট্টভবদেবের প্রশস্তিতে বালবলভীর উল্লেখ সর্ব্বপ্রথমে দেখিতে পাওয়া যায়[৪]। ভুবনেশ্বর-প্রশস্তি এবং ‘রামচরিত’ ব্যতীত ভবদেবভট্ট-বিরচিত ‘প্রায়শ্চিত্তনিরূপণ’ ও ‘তন্ত্রবার্ত্তিকটীকা’ নামক গ্রন্থদ্বয়ে তাঁহার ‘বালবলভীভুজঙ্গ’ উপাধিতে, বালবলভীর নাম দেখিতে পাওয়া যায়[৫]। বঙ্গদেশে বর্ত্তমান সময়ে দেবগ্রাম নামে বহু গ্রাম আছে সুতরাং দেবগ্রাম বা বালবলভী যে নদীয়া জেলায় অবস্থিত ছিল এ কথা নিশ্চয়রূপে বলা যাইতে পারে না[৬]। বিক্রমরাজের পরে শূরবংশীয় অপরমন্দারের অধিপতি লক্ষ্মীশূরের নাম দেখিতে পাওয়া যায়। তিনি ‘রামচরিতে’ ‘অপরমন্দারমধুসূদনঃ সমস্তাটবিকসামন্তচক্রচূড়ামণিঃ” উপাধিতে বিভূষিত হইয়াছেন। লক্ষ্মীশূরের
- ↑ Epigraphia Indica, vol. V, App. p. 90, No. 668.
- ↑ Memoirs of the Asiatic Society of Bengal, Vol. III. p. 14.
- ↑ “দেবগ্রামপ্রতিবদ্ধসুধাচক্রবালবালবলভীতরঙ্গবহলগলহস্তপ্রশস্তহস্তবিক্রমো...।”
- ↑ Epigraphia Indica. Vol. VI, p. 207.
- ↑ Ibid. pp. 204-06.
- ↑ শ্রীযুক্ত নগেন্দ্রনাথ বসু এইমত প্রকাশ করিয়াছেন।
—বঙ্গের জাতীয় ইতিহাস (রাজন্যকাণ্ড), পৃঃ ১৯৮।