গ্রহণের দুইটি কারণ অনুমান করা যাইতে পারে; প্রথম রামপাল কর্ত্তৃক বঙ্গ আক্রমণ এবং দ্বিতীয় সেনবংশীয় সামন্তসেন কর্ত্তৃক বঙ্গদেশ অধিকার। বৃদ্ধ বয়সে রামপালদেব জ্যেষ্ঠ পুত্র রাজ্যপালদেবের হস্তে রাজ্যভার অর্পণ করিয়া রামাবতীতে বাস করিয়াছিলেন[১]। মুদ্গগিরি রা মুঙ্গের অবস্থানকালে রামপালদেব তাঁহার মাতুল মথনদেবের মৃত্যু সংবাদ পাইয়াছিলেন[২]। মথনদেবের মৃত্যু সংবাদ শ্রবণ করিয়া রামপালদেব ব্রাহ্মণগণকে বহু ধন দান করিয়া গঙ্গা-সলিলে প্রবেশ পূর্ব্বক প্রাণত্যাগ করিয়াছিলেন[৩]। তিনি বোধ হয়, পঞ্চত্বারিংশদ্বর্ষকাল গৌড়-সিংহাসনে আসীন ছিলেন; কারণ, তাঁহার ৪২শ রাজ্যাঙ্কে প্রতিষ্ঠিত একটি মূর্ত্তি আবিষ্কৃত হইয়াছে।
তিব্বতদেশীয় ইতিহাসকার লামা তারানাথ লিপিবদ্ধ করিয়া গিয়াছেন যে, রামপালদেব ষট্চত্বারিংশ বৎসরকাল গৌড়ে রাজত্ব করিয়াছিলেন[৪]; ইহা অসম্ভব নহে; কারণ, তাঁহার ৪২শ রাজ্যাঙ্কের খোদিতলিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে। গৌড়ে মুসলমান অধিকারকালে লিখিত “শেখ-শুভোদয়া” নামক সংস্কৃত গ্রন্থ হইতে অবগত হওয়া যায়
- ↑
তত্র স রাজা নিবসন্নানাবিষয়সন্নিবেশেন।
সূনুসমর্পিতরাজ্যো রামঃ কান্তা সখশ্চিরং রেমে॥
—রামচরিত, ৪।১।
- ↑
প্রাপ্তে কালে সরিতি দুর্ব্বাসসাদিত্যাশ্রবসেতুঃ।
বৃষজিন্মথনোঽস্ততনুর্নিঃশ্রেণিকয়াদ্রিসুতপুরান্তরয়া॥
ইত্যধিমুদ্গিরি কলয়ন্ ব্রহ্মভুবঃ স্বং বহুপ্রদাতাঽসৌ।
কৃতনিশ্চয়ঃ কৃতার্থঃ প্রাস্থিত পৃথ্বীপতির্মহাসরিতং॥
—রামচরিত, ৪।৮-৯।
- ↑
জনজাতে রুদতি শুচা সারবমগ্রাহ্য তজ্জলং পুণ্যং।
বিরহসহপরিজনৈদুর্ব্বিষহং রামো জগাম স স্বভুবং॥
—রামচরিত, ৪।১০।
- ↑ Indian Antiquary, Vol. IV, p. 366.