পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৩১৩

ছিলেন[১]। কোন্ সময়ে, কিরূপে মদনপালের রাজ্যাবসান হইয়াছিল এবং তাঁহার কোন বংশধর পাল-সাম্রাজ্যের কোন অংশের অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন কিনা তাহা নির্ণয় করিবার কোন উপায়ই অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। মদনপালদেবই বোধ হয় পাল-রাজবংশের শেষ রাজা। খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর শেষভাগে গোবিন্দপাল নামক একজন নরপতি কিয়ৎকালের জন্য মগধের অধিকার লাভ করিয়াছিলেন, কিন্তু সেন-রাজগণের আক্রমণে তাঁহার অধিকারের অধিকাংশ তাঁহার হস্তচ্যুত হইয়াছিল। পরবর্ত্তী অধ্যায়ে মুসলমান-বিজয়-প্রসঙ্গে গোবিন্দপালের রাজত্বের কথা আলোচিত হইবে[২]

 মদনপালদেবের একখানি তাম্রশাসন ও দুইখানি শিলালিপি আবিষ্কৃত হইয়াছে। মদনপাল তাঁহার অষ্টম রাজ্যাঙ্কে পৌণ্ড্রবর্দ্ধনভুক্তির অন্তঃপাতী কোটীবর্ষবিষয়ে কাষ্ঠগিরি (?) গ্রাম, মহারাজ্ঞী পট্টমহাদেবী চিত্রমতিকাদেবীকে মহাভারত পাঠ করিয়া শুনাইবার দক্ষিণাস্বরূপ চম্পাহিট্টি নিবাসী বটেশ্বরস্বামীশর্ম্মা-নামক জনৈক ব্রাহ্মণকে দান করিয়াছিলেন[৩]। মদনপালদেবের তৃতীয় রাজ্যাঙ্কে একটি ষষ্ঠীমূর্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল[৪]। এই মূর্ত্তিটি বিহার নগরে আবিষ্কৃত হইয়াছিল। তাঁহার ঊনবিংশ রাজ্যাঙ্কে আর একটি মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছিল; এই মূর্ত্তিটি মুঙ্গের জেলায় জয়নগর গ্রামে আবিষ্কৃত হইয়াছিল[৫]। কিন্তু এই দুইটি মূর্ত্তির একটিরও সন্ধান পাওয়া যায় না।

  1. সিংহীসুতবিক্রান্তেনার্জ্জুনধাম্না ভুবঃ প্রদীপেন।
    কমলাবিকাশভেষজভিষজা চন্দ্রেণ বন্ধুনোপেতাম্॥—রামচরিত, ৪।২০।

  2. গোবিন্দপালের রাজত্বকালের ঘটনাসমূহ সম্বন্ধে দ্বাদশ পরিচ্ছেদ দ্রষ্টব্য।
  3. গৌড়লেখমালা, পৃঃ ১৫৪।
  4. Cunningham, Archæological Survey Reports, Vol. III, p. 124, no. 16.
  5. Ibid, p. 125. No. 17. pl. XLI.