পত্নীর নাম যশোদেবী[১]। হেমন্তসেনের কোন খোদিতলিপি বা তাম্রশাসন অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। দেবপাড়ার শিলালিপি এবং বল্লালসেনের তাম্রশাসনে সামন্ত এবং বিজয়সেনের পূর্ব্বোক্ত পরিচয় অবগত হওয়া যায়। হেমন্তসেনের পুত্রের নাম বিজয়সেন[২]। পূর্ব্বে মদনপাল ও ভোজবর্ম্মদেবের রাজত্বকালের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজয়সেনের কথার অবতারণা করিতে হইয়াছে। সেন-রাজবংশের খোদিতলিপিমালা হইতে বুঝিতে পারা যায় যে, বিজয়সেনই সেন-রাজবংশের প্রথম স্বাধীন নরপতি। অনুমান হয় যে, বিজয়সেন প্রথমে রাঢ়দেশের অংশবিশেষের এবং পরে সমগ্র রাঢ়দেশের অধিপতি হইয়াছিলেন। উৎকল-রাজ অনন্তবর্ম্মা চোড়গঙ্গ যথন গৌড় রাজ্য আক্রমণ করিয়াছিলেন তখন বিজয়সেন বোধ হয় পালবংশীয় গৌড়েশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করিয়াছিলেন। যুদ্ধান্তে বোধ হয় সমগ্র উত্তররাঢ়া ও দক্ষিণরাঢ়া তাঁহার করতলগত হইয়াছিল। বিজয়সেনই বোধ হয় পূর্ব্ববঙ্গে বর্ম্মবংশীয় ভোজবর্ম্মা অথবা তাঁহার উত্তরাধিকারীর অধিকার লোপ করিয়াছিলেন। পালবংশীয় গৌড়েশ্বরগণের সহিত সেনবংশীয় রাজগণের প্রীতিবন্ধন ছিল না, কারণ রামপাল যখন দুর্দ্দশাগ্রস্ত হইয়া সাহায্য ভিক্ষার জন্য দেশভ্রমণ করিতেছিলেন, তখন সেন-রাজগণ তাঁহাকে সাহায্য করেন নাই। তাঁহারা কৈবর্ত্ত-বিদ্রোহ দমনে যোগদান করিলে সন্ধ্যাকরনন্দী
- ↑
মহারাজ্ঞী যস্য স্বপরনিখিলান্তঃপুর বধূ-
শিরোরত্নশ্রেণীকিরণসরণিস্মেরচরণা।
নিধিঃ কান্তেঃ সাধ্বীব্রতবিততনিত্যোজ্বলযশা
যশোদেবী নাম ত্রিভুবনমনোজ্ঞাকৃতিরভূৎ॥ ১৪
—Epigraphia India, Vol. I, pp. 308-309.
- ↑
তস্মাদভূদখিলপার্থিবচক্রবর্ত্তী নির্ব্ব্যাজবিক্রমতিরস্কৃতসাহসাঙ্কঃ।
দিক্পালচক্রপুটভেদনগীতকীর্ত্তিঃ পৃথ্বীপতির্ব্বিজয়সেনপদপ্রকাশঃ॥ ৭
—বঙ্গীয়-সাহিত্য-পরিষৎ-পত্রিকা, ১৭শ ভাগ, ১৩১৭, পৃঃ ২৩৫।
—Epigraphia Indica, Vol. XIV, p. 159-160.