পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৩১৯

শূরবংশের দুহিতা বিলাসদেবীর পাণিগ্রহণ করিয়াছিলেন। তাঁহার পুত্রের নাম বল্লালসেন। বিজয়সেন অন্যূন পঞ্চত্রিংশ বর্ষকাল গৌড়সিংহাসনে আসীন ছিলেন, কারণ তাঁহার ৩২শ রাজ্যাঙ্কে সম্পাদিত একখানি তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইয়াছে। খৃষ্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বিজয়সেন স্বর্গারোহণ করিয়াছিলেন, এবং বিলাসদেবীর গর্ভজাত তাঁহার পুত্র বল্লালসেন পিতৃরাজ্যের অধিকার প্রাপ্ত হইয়াছিলেন। বিজয়সেনদেবের একখানি শিলালিপি ও একখানি তাম্রশাসন আবিষ্কৃত হইয়াছে। শিলালিপিখানি পূর্ব্বোক্ত দেবপাড়ার শিলালিপি। ইহা হইতে অবগত হওয়া যায় যে, বিজয়সেন প্রদ্যুম্নেশ্বর নামক শিবলিঙ্গের জন্য একটি বৃহৎ মন্দির নির্ম্মাণ করাইয়াছিলেন, এবং তাহার সম্মুখে একটি বৃহৎ হ্রদ খনন করাইয়াছিলেন। রাজসাহী জেলার দেবপাড়া গ্রামে এই বৃহৎ হ্রদতীরে পাষাণনির্ম্মিত প্রদ্যুম্নেশ্বর মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ অদ্যাপি বিদ্যমান আছে। প্রসিদ্ধ কবি উমাপতিধর কর্ত্তৃক এই প্রশস্তি রচিত হইয়াছিল এবং ইহা বারেন্দ্রক শিল্পীগোষ্ঠী-চূড়ামণি রাণক শূলপাণি কর্ত্তৃক উৎকীর্ণ হইয়াছিল[], বিজয়সেনের তাম্রশাসনখানি কোন্ স্থানে আবিষ্কৃত হইয়াছিল তাহা বলিতে পারা যায় না। কয়েক বৎসর পূর্ব্বে জনৈক ভদ্রব্যক্তি ইহা পাঠোদ্ধারের জন্য আমার নিকট আনিয়াছিলেন। পাঠোদ্ধার শেষ হইলে তিনি উহা লইয়া গিয়াছেন এবং প্রতিশ্রুত হইয়াও আমাকে উহার উদ্ধৃতপাঠ প্রকাশ করিবার অবসর প্রদান করেন নাই। এখন শুনিতেছি, ইহা সুমেকার (Schumacher) নামক জনৈক বিদেশীয় ভদ্রলোকের সম্পত্তি[]

  1. Epigraphia Indica, Vol. I, p. 311.
  2. Epigraphia Indica, Vol. XV, 278 p. অধ্যাপক শ্রীযুক্ত রাধাগোবিন্দ বসাক পরে এই তাম্রশাসনের পাঠোদ্ধার করিয়াছেন। তাঁহার মতানুসারে ইহা বিজয়সেনের ৬২ রাজ্যাঙ্কে প্রদত্ত হইয়াছিল। সাহিত্য, ৩১শ ভাগ, ১৩২৮, পৃঃ ৮১-৯৭।