পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
একাদশ পরিচ্ছেদ।
৩২৫

বোধ হয় পালবংশীয় নরপালগণের সাহায্যার্থ মগধ আক্রমণ করিয়াছিলেন। কিন্তু দেশ অধিকৃত হইলে তিনি উহা পাল-রাজগণকে প্রত্যর্পণ করেন নাই। লক্ষ্মণসেনের পুত্র কেশবসেন ও বিশ্বরূপসেনের তাম্রশাসনদ্বয়ে দেখিতে পাওয়া যায় যে, লক্ষ্মণসেন বারাণসীতে এবং প্রয়াগে জয়স্তম্ভ স্থাপন করিয়াছিলেন[১]। বোধ হয় মগধে কান্যকুব্জ-রাজের সহিত যুদ্ধের সময়ে লক্ষ্মণসেন বারাণসী ও প্রয়াগ অবধি অগ্রসর হইয়াছিলেন। মাধাইনগরে আবিষ্কৃত লক্ষ্মণসেনদেবের তাম্রশাসন হইতে অবগত হওয়া যায় যে, তিনি প্রথম যৌবনে কলিঙ্গের অঙ্গনাগণের সহিত কেলি করিয়াছিলেন[২]। এতদ্বারা বোধ হয় সূচিত হইতেছে যে, লক্ষ্মণসেন এক সময়ে কলিঙ্গদেশ আক্রমণ করিয়াছিলেন। মাধাইনগরে আবিষ্কৃত তাম্রশাসন হইতে আরও অবগত হওয়া যায় যে, তিনি কামরূপ জয় করিয়াছিলেন[৩]। লক্ষ্মণসেনের মহিষীর নাম তান্দ্রাদেবী বা তাড়াদেবী[৪]। ইঁহার গর্ভে লক্ষ্মণসেন দুই পুত্র উৎপাদন করিয়াছিলেন। ইঁহাদিগের নাম বিশ্বরূপসেন ও কেশবসেন এবং ইঁহারা যথাক্রমে লক্ষ্মণসেনদেবের মৃত্যুর পরে সিংহাসনে আরোহণ করিয়াছিলেন। লক্ষ্মণসেনদেবের রাজত্বের

  1. বেলায়াং দক্ষিণাব্ধের্ম্মুসলধরগদাপাণিসংবাসবেদ্যাং
    ক্ষেত্রে বিশ্বেশ্বরস্য স্ফুরদসিবরণাশ্লেষগঙ্গোর্ম্মিভাজি।
    তীরোৎসঙ্গে ত্রিবেণ্যাঃ কমলভবমখারম্ভনির্ব্ব্যাজপূতে
    যেনোচ্চৈর্যজ্ঞযূপৈঃ সহ সমরজয়স্তম্ভমালান্যধায়ি॥ ১২
     —Journal of the Asiatic Society of Bengal, 1896, pt. I, p. 11.

  2. Journal & Proceedings of the Asistic Society of Bengal, New Series, Vol. V, p. 473.
  3. Ibid. এই তাম্রশাসনেও লক্ষণসেনের সহিত কাশী-রাজের যুদ্ধের কথা উল্লিখিত আছে; “যেনাসৌ কাশিরাজঃ সমরভুবি জিতা......।”
  4. Journal of the Asiatic Society of Bengal, 1896, pt. I, p. 11.