বর্ত্তের তোরণ-রক্ষায় নিযুক্ত ছিলেন। এই সময়ে পঞ্চনদের পূর্ব্ব ও দক্ষিণ-সীমান্তসংলগ্ন ভূখণ্ডে কোন্ রাজবংশের অধিকার ছিল, তাহা অদ্যাপি নির্ণীত হয় নাই। রাজপুত জাতির চারণের গাথা হইতে অবগত হওয়া যায় যে, পঞ্চনদের মুসলমান-রাজ্যের পূর্ব্ব-সীমান্তে তোমর-বংশজাত রাজপুত জাতির অধিকার ছিল। ধীরে ধীরে পঞ্চনদ-রাজ্যও মহ্মূদের বংশধরগণের হস্তচ্যুত হইল; গোর-রাজগণ তোমর-রাজ্যের সীমান্ত পর্য্যন্ত স্বীয় অধিকার বিস্তার করিয়াছিলেন। এই সময় হইতে দিল্লীর তোমর-বংশের সহিত গোর-রাজগণের বিবাদ আরম্ভ হইল। দিল্লীর তোমর-বংশের কোন শিলালিপি বা তাম্রশাসন অদ্যাবধি আবিষ্কৃত হয় নাই। রাজপুত চারণগণের বংশাবলী তোমর-বংশের ইতিহাস গঠনের একমাত্র উপাদান। বাঙ্গালা দেশের কুলশাস্ত্রের ন্যায় রাজপুত-চারণগণের বংশাবলীও ভ্রমপরিপূর্ণ এবং কল্পনাপ্রসূত। এখন আর কেহ বিশ্বাস করে না যে, মেবারের রাণাগণ সূর্য্যবংশসম্ভূত ভগবান রামচন্দ্রের বংশজাত। শ্রীযুক্ত দেবদত্ত রামকৃষ্ণ ভাণ্ডারকর প্রমাণ করিয়াছেন যে, রাণা-বংশের আদিপুরুষ জনৈক নাগর-ব্রাহ্মণের ঔরসে হীনজাতীয়া রমণীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন[১]। এখন আর কেহ বিশ্বাস করেন না যে, যোধপুরের রাঠোর-রাজবংশ কান্যকুব্জ-রাজ জয়চ্চন্দ্রের বংশসম্ভূত। যোধপুর-রাজবংশের আদিপুরুষের সহিত কান্যকুব্জের গাহডবাল-বংশের শোণিতসম্পর্ক ছিল না[২]। পঞ্চনদে রোহতক জেলায় পালাম নামক গ্রামে আবিষ্কৃত ১৩৩৬ বিক্রমাব্দে (১২৮৪ খৃষ্টাব্দে) সুলতান গিয়াস্উদ্দীন বল্বনের রাজত্বকালে উৎকীর্ণ একখানি শিলালিপি হইতে
পাতা:বাঙ্গালার ইতিহাস প্রথম ভাগ (রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায়).djvu/৩৫৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৩৮
বাঙ্গালার ইতিহাস।